এক সপ্তাহ আগে থেকেই কলকাতায় আছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। উদ্দেশ্য নতুন ছবি ‘বিসর্জন’। হ্যাঁ, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত এ ছবিটি এরই মধ্যে মুক্তি পেয়েছে কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে। এর প্রচার-প্রচারণার উদ্দেশ্যে গত সপ্তাহেই সেখানে পৌঁছে গেছেন জয়া। অর্থাৎ, এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপনটা কলকাতায়ই হলো তার। এ কারণে দেশের এতসব আয়োজন খুব স্বাভাবিকভাবেই মিস করতে হয়েছে জয়াকে। ‘বিসর্জন’ মুক্তির আগে কলকাতার একটি পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ঢাকার অনুষ্ঠানটা খুব মিস করবো। ওখানে প্রত্যেক বাড়িতে সকাল থেকে উদযাপন শুরু হয়ে যায়। তাছাড়া সব জেলায়ই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়। ঢাকায়ও হয়। সকাল থেকে বহু লোক সেখানে যান। যাদের খুব বড় করে উদ্যাপন করার সামর্থ্য নেই, তারাও কিন্তু নিজেদের মতো করে কিছু না কিছু করেন। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোয় ওই দিনের আয়োজনও দেখার মতো। দেশের অনুষ্ঠান মিস করলেও কলকাতায় এবার জয়ার পহেলা বৈশাখটা হয়েছে অন্যরকম। প্রথমত এই দিনেই তার অভিনীত ‘বিসর্জন’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে। আবার এটিই কিনা মুক্তির আগে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে। বিষয়টি সত্যিই সুখকর জয়ার জন্য। ক্যারিয়ারের এমন বর্ণিল সময় হয়তো এর আগে কমই উপভোগ করেছেন জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী। ‘বিসর্জন’-এর জাতীয় পুরস্কার পাওয়া প্রসঙ্গে জয়া ওই পত্রিকার সাক্ষাৎকারে আরো বলেন, সেদিন হঠাৎ কৌশিকদার অ্যাসিস্ট্যান্ট রাজদীপ আমাকে ফোন করে বললো, খবর শুনেছো? আমি তো ঘাবড়ে গিয়ে বলছি, কিসের খবর! উত্তর এলো, আমাদের হয়ে গেছে তো! বেস্ট ফিল্ম, ন্যাশন্যাল অ্যাওয়ার্ড! আমি শুনেই ফোনে চিৎকার করতে শুরু করেছি। এমনিতে আমি আমার দেশে দু’বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু এটা ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান। আমার জন্য তৃতীয়বার। অভিনেত্রী হিসেবে না পেলেও এটা আমাদের সকলেরই পাওয়া। তাই আনন্দের কোনো সীমা ছিল না। জয়ার এই আনন্দে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে ‘বিসর্জন’ মুক্তির ঠিক দুদিন আগে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিদ্যা বালানের সঙ্গে দেখা ও একফ্রেমে বন্দি হওয়া। পাশাপাশি ১৩ই এপ্রিল ‘বিসর্জন’ ছবির প্রিমিয়ারে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট তারকা মাইকেল ক্লার্কের উপস্থিতি আরো রঙিন করে তোলে জয়ার এই বর্ণিল সময়কে। শুধু তাই নয়, প্রিমিয়ার শেষে ক্লার্কের সঙ্গে নায়িকার আড্ডা ও সেলফিও লক্ষ্য করা গেছে। এখানেই জয়ার সুখকর অধ্যায়ের ইতি ঘটছে না। ‘বিসর্জন’ মুক্তি উপলক্ষে কলকাতায় যাওয়ার ঠিক কয়েকদিন আগেই জানান দেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘দেবী’ অবলম্বনে নির্মাণাধীন ছবি ‘দেবী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো প্রযোজনার কাজও জয়াই করছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদের শুরুর দিকের গল্প ‘দেবী’ নিয়ে ছবি করছি। গল্পটা আমার ছোট থেকেই খুব প্রিয়। পড়তে পড়তে একটা ভিজ্যুয়াল সামনে ভেসে উঠতো। দেখলাম কেউ এটা নিয়ে ছবি বানাচ্ছে না। তাই নিজেই করবো ঠিক করলাম। নিজের প্রযোজনা ছাড়াও কয়েকটা কাজ করেছি। আমার যিনি প্রথম পরিচালক, তার সঙ্গে একটা ছবি শেষ করলাম। সার্কাসের ট্র্যাপিজ পারফর্মারের গল্প নিয়ে আরেকটা ছবিও করেছি। প্রত্যেকটা চরিত্রই খুব ডায়নামিক। প্রযোজনার কাজটি বেশ ঝুঁকির। আর সে সাহসটা দেখাতে ঢাকাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নায়ক-নায়িকাদের মধ্যে কমই লক্ষ্য করা যায়। জয়া এমন এক সাহসিক কাজে হাত দিলেন কিভাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার থেকে একটা সাবসিডি পেয়েছিলাম। তাই ঝুঁকিটা নিয়েই ফেললাম। শুধু অভিনয় নয়, বাংলাদেশের সিনেমাকে আরো উন্নত করার ইচ্ছে রয়েছে।
যখন টেলিভিশনের একদম টপে অনেক বেশি পারিশ্রমিকে কাজ করতাম,
তখন সব ছেড়ে ফিল্মে অভিনয় শুরু করি। আরো ভালো ছবি যাতে করা যায়, সেই তাগিদ থেকেই। সেটাও ঝুঁকির কাজ ছিল।