শনিবার সকালে হিরোশিমা সফররত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র রাষ্ট্র জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে সমন্বিতভাবে উত্তর কোরিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলা করতে সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাপানি সৈন্যরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বলেও জানান কিশিদা।
জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী এই মন্ত্রী বলেন, “উত্তর কোরিয়া তাদের সীমা অতিক্রম করে গেছে, তারা তাদের প্রতিষ্ঠাতা নেতা কিম জং সাংয়ের ১০৫ তম জন্মবার্ষিকী পালন করছে। দেশটি নতুন ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উত্তজেনা তৈরি করতে পারে এমন আশঙ্কা করছি আমরা, তবে এইবার আমরা ছাড় দেব না।”
উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য অস্ত্র পরীক্ষা ও তা ঠেকাতে কোরীয় উপদ্বীপমুখে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর একটি স্ট্রাইক গ্রুপ রওনা হওয়ার খবরে জাপানিদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
ওদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ৬০ হাজার জাপানি বসবাস করে। এদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত জাপান।
এ প্রেক্ষিতে কিশিদা সাংবাদিকদের বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত জাপানিদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি। জরুরি অবস্থার মধ্যে কিভাবে তাদেরকে ফিরে আনা যায় তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী আবের নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর শক্রবার সন্ধ্যায় জাপানের মন্ত্রীপরিষদ সচিব ইয়াশিদা সুগা এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত যদি যুদ্ধ লেগেই যায় সে ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্মতির ভিত্তিতে জাপান দেশটিতে সৈন্য, রণতরী ও অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠাবে।
বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করার দরকার, জাপান সরকার তা করবে বলে জানান তিনি।
শনিবার উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সাংয়ের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী ‘সূর্যের দিন’ পালন উপলক্ষ্যে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে সামরিক প্যারেড চলছে। দিনটি উপলেক্ষ্যে উত্তর কোরিয়া নতুন কোনো অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে পারে, এমন সম্ভাবনায় কোরীয় উপদ্বীপ ও এর আশপাশজুড়ে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উত্তর কোরিয়ার নতুন অস্ত্র পরীক্ষার জবাব যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে দিতে পারে এমন সম্ভাবনায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে তার ‘সামরিক হিস্টিরিয়ার’ সমাপ্তি টানতে বলেছে উত্তর কোরিয়া নইলে ‘চরম প্রত্যাঘাতের’ মুখোমুখি হতে হবে বলে সতর্ক করেছে।