আইপিএল খবর : ইডেনের সবুজ পিচ দেখে হাঁটতে হাঁটতে একবারে পিচের সামনে চলে এলেন কিংগস ইলেভেন পঞ্জাব অধিনায়ক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। সঙ্গে প্রীতি জিন্টার টিমের মেন্টর বীরেন্দ্র সহবাগ।
একটু পরে সেই দলে গিয়ে যোগ দিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ম্যাক্সওয়েল ততক্ষণে নেটে ঢুকে পড়েছেন। তাঁর জমানার অধিনায়কের সঙ্গে পিচের সামনেই গভীর আলোচনা করতে দেখা গেল সহবাগকে।
যা দেখে প্রশ্ন উঠল কেকেআরের এত দিন শক্তি ছিল স্পিনাররা। এ বার সবুজ পিচ দেখে কি চমকে গেলেন ম্যাক্সওয়েল-রা? ইংল্যান্ডের হয়ে কয়েক মাস আগে এই পিচেই খেলে গিয়েছেন কিংগসদের ইংরেজ ব্যাটসম্যান ইয়ন মর্গ্যান। প্রাক্তন এই নাইট এখন প্রীতি জিন্টার দলে। ইডেনের পিচ কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘পিচে রান আছে। বল ব্যাটে আসবে। ব্যাটসম্যানদের যেমন সুবিধা তেমনই বোলাররাও বাউন্স থেকে সুবিধা পাবে। একদম স্পোর্টিং উইকেট।’’
যা শুনে আবার ঋদ্ধিমান সাহা বলছেন, ‘‘অতীত নিয়ে ভাবছি না আমরা। বিপক্ষ যাতে আমাদের ওপর চেপে না বসে তার জন্য শুরু থেকেই সচেষ্ট হতে হবে।’’
গত কয়েক বছরে কেকেআর-এর অস্ত্র ছিল স্পিন। সেই স্লো টার্নার মাঠে কি না এ বার পেস সহায়ক উইকেট? সন্ধেয় অনুশীলনের ফাঁকে ইডেনে দাঁড়িয়ে নাইটদের কোচ জাক কালিস গলা চড়িয়ে বলে যান, ‘‘উইকেট আগের চেয়ে বদলেছে। এই পিচে এ বার বেশ কয়েকটা অনুশীলন ম্যাচ খেলেছি আমরা। পিচ ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমরা এ বার শিবির শুরু করেছিলাম একটু আগেই। তাই ঘরের মাঠে খেলার সব রকম সুবিধা পাব আমরাই।’’
নাইটদের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ আরও বলেন, ‘‘আমরা ভাগ্যবান যে আমাদের স্পিনাররা যে কোনও পরিবেশ বা পিচেই লড়াই করার জন্য তৈরি। সাফল্য পেতে গেলে উইকেট যে ওদের মনের মতো হতে হবে তা নয়। মিস্ট্রি স্পিনার থেকে রিস্ট স্পিনার—কী নেই। ওরা অনেক অর্থোডক্স স্পিনারের চেয়ে ভয়ঙ্কর। ভাল উইকেটে ওরা আরও কার্যকর হবে।’’
কেকেআর কোচ মন্দ বলেননি। ক্যারিবিয়ান সুনীল নারাইন থেকে চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব, লেগ স্পিনার পীযূষ চাওলা অথবা স্পিনিং অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সেখানে এ বার ক্রিস ওকস, ট্রেন্ট বোল্টরা আগুন ঝরাতে পারেন সবুজ পিচে। যে কথা মাথায় রেখে আত্মবিশ্বাসী কেকেআর কোচ বলে দেন, ‘‘আমাদের দলে যা বোলিং প্রতিভা রয়েছে তাতে যে কোনও পিচেই মিলিয়ে-জুলিয়ে আমাদের বোলিং আক্রমণ ঠিক দাঁড়িয়ে যাবে। বিশেষ উইকেটের জন্য বিশেষ টিম কম্বিনেশনও তৈরি।’’
আর বিপক্ষ কিংগস ইলেভেন পঞ্জাব? যারা দশম আইপিএলে পরপর দু’ম্যাচে জিতে ইডেনে এসেছে? গলায় সমীহ কালিসের। বলে দেন, ‘‘টুর্নামেন্টের অন্যতম ব্যালান্সড দল। ভাল ছন্দে শুরু করেছে। ওদের হারাতে নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে। আশা করছি ঘরের মাঠে জয়ে ফিরতে পারব আমরা।’’
এ দিন বিকেলে ইডেনে কিংগসদের অনুশীলনে একটি উইকেট রেখে টানা বল করে যাচ্ছিলেন ইশান্ত শর্মা। প্রাক্তন নাইটের ‘বেস প্রাইজ’ বেশি বলে এ বার তাঁকে টিমে নেওয়ার ব্যাপারে রাজি ছিলেন না নাইটদের কোচ গৌতম গম্ভীর। সেই হিসেবে কি বৃহস্পতিবার ইশান্তের বদলার ম্যাচ? জানতে চাওয়া হলে উত্তর না দিয়ে স্থান ছেড়ে যান প্রীতি জিন্টার দলের পেসার।
চোটের জন্য ক্রিস লিন না থাকায় দলে ঢুকছেন নাইটদের দলে ঢুকতে পারেন সাকিব আল হাসান। আর মুম্বই-এর বিরুদ্ধে শেষের দিকে তিন ওভারে ট্রেন্ট বোল্ট ও অঙ্কিত রাজপুত মিলে ৪৯ রান দেওয়ায় বাদ পড়তে পারেন দ্বিতীয় জন। সে ক্ষেত্রে অঙ্কিতের জায়গায় আসতে পারেন উমেশ যাদব। প্রথম ম্যাচে গুজরাতকে দশ উইকেটে হারানোর পর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে হার যে নাইটরা এখনও হজম করতে পারেনি, তা কালিসের কথাবার্তাতেই স্পষ্ট।
ঘরের মাঠের পিচ যদি এ বারের আইপিএল-এ বিপক্ষকে ধন্দে রাখে, তা হলে নাইটদের ফিল্ডিং চওড়া করতে পারে ম্যাক্সওয়েলদের হাসি। যা মেনে নিয়ে কালিস বলছেন, ‘‘আগে এই ফিল্ডিং ছিল আমাদের শক্তি। কিন্তু এখন দেখছি এই জায়গাটা মেরামত করতে হবে।’’