আইপিএল খবর : আইপিএলে প্রথম ম্যাচে দশ উইকেটে দুরন্ত জয়। দ্বিতীয় ম্যাচে কাছাকাছি এসেও মুম্বইয়ের অভিশাপ না কাটা। তৃতীয় ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সের জন্য তাদের ঘরের মাঠে কী অপেক্ষা করছে?
মঙ্গলবার গৌতম গম্ভীরদের প্র্যাকটিসে গিয়ে যা মনে হল, এর উত্তর হচ্ছে— ঘাস অপেক্ষা করছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের তুলনায় বেশ সবুজ ভাব পিচে। এবং, তা নিয়ে নাটকও শুরু হয়ে গিয়েছে। কেকেআরের পক্ষ থেকে ঘাস ছাঁটার আর্জি জানানো হয়েছে সিএবি-র কাছে। প্রথমে সেই অনুরোধ যায় সিএবি-র কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ের কাছে। বেশ খানিক্ষণ কথা বলতে দেখা যায় সুজন এবং কেকেআরের সিইও বেঙ্কি মাইসোর-কে। যদিও দু’জনেই পরে অস্বীকার করেছেন যে, তাঁদের কথোপকথন পিচ নিয়েই ছিল।
এখানেই শেষ নয়। সন্ধের পর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় মাঠে আসামাত্র তাঁর কাছে ছুটে যান কেকেআর সিইও। দু’জনকে কথা বলতে দেখা যায় মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে। সেই কথোপকথন নিয়েও সিইও দাবি করেন, পিচ নিয়ে কিছু বলেননি। অন্যান্যা ব্যাপারে কথা হচ্ছিল। সিএবি থেকে একাধিক সূত্রে অবশ্য খবর মিলেছে, পিচের ঘাস নিয়ে দু’পক্ষ সহমত নয়।
কেকেআর টিমের মধ্যেও অনেকে পিচের ঘাস দেখে বিস্মিত। এ দিন মাঠে আসার পরেই প্রধান কোচ জাক কালিস এবং সহকারী কোচ সাইমন ক্যাটিচ পিচ দেখতে চলে যান। তখন তাঁদের ভাবভঙ্গি বা শরীরীভাষা দেখে মনে হচ্ছিল না, খুব প্রসন্ন হয়েছেন। যদিও কিউরেটর সুজন এ বলছিলেন, ‘‘এটা কিন্তু ভাল উইকেট হবে। দু’শোর কাছাকাছি রান আছে। ঘাস অনেকটা কাটাও হয়েছে।’’
পরিদর্শক: মাঠ ঘুরে দেখলেন সিএবি প্রধান সৌরভ।
ইডেনের বাইশ গজের চরিত্রের বদল ঘটেছে সম্প্রতি। আগের মতো আর স্লো টার্নার নেই, পিচে এখন রয়েছে বাড়তি গতি এবং বাউন্স। হালফিলে আন্তর্জাতিক ম্যাচেও সেটাই দেখা গিয়েছে। তবে স্পিনাররাও বাড়তি বাউন্সকে কাজে লাগিয়ে উইকেট পেয়েছেন। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে ইডেনের কিউরেটর বললেন, ‘‘পেসাররা যেমন সাহায্য পাবে, তেমনই স্পিনারদের জন্যও কিছু থাকবে। তেমনই স্ট্রোকপ্লেয়াররা শট খেলে আনন্দ পাবে।’’ তাঁর কথা শুনে মনে হবে ইডেনে আদর্শ স্পোর্টিং উইকেট হতে যাচ্ছে।
কেকেআরের কি তা-ই মনে হচ্ছে? হাবেভাবে তো ধরা পড়ছে না সে রকম কিছু। বিশেষ করে কেকেআরের ব্যাটিংয়ে ওপরের দিকের প্রায় সবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে। গৌতম গম্ভীর, রবিন উথাপ্পা বা ইউসুফ পাঠান কেউ আর ভারতীয় দলে খেলছেন না। প্রত্যেকেই স্পিনের বিরুদ্ধে বেশি সচল, গতিতে নয়। একটা দিক দিয়ে অবশ্য নাইটরা স্বস্তি পেতে পারেন। কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবের দলে খুব আহামরি পেসার কেউ নেই। বরুণ অ্যারন আছেন। কিন্তু গতি থাকলেও ছন্দ নেই তাঁর।
সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে কেকেআরের পেস আক্রমণ অনেক ভাল। দুরন্ত ফর্মে থাকা উমেশ যাদব মঙ্গলবারই নেমে পড়লেন অনুশীলনে। ট্রেন্ট বোল্ট আছেন। যদিও তাঁকে প্র্যাকটিসে দেখা যায়নি মঙ্গলবার। ক্রিস ওক্স-ও বাউন্স পেলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। নাইট শিবিরের এক জন তাই জোর গলায় বলে গেলেন, ‘‘আমাদের দলে তিন জন ভাল স্পিনার আছে। তিন জন ভাল পেসার আছে। পিচ যে রকমই হোক আমাদের রসদের অভাব হবে না। ইডেনের পিচের চরিত্র পাল্টেছে ধরে নিয়েই আমরা নিলামে পেসার তোলার লক্ষ্য নিয়ে গিয়েছিলাম।’’
এর পরেও বড় ধাক্কা হয়ে থাকছে ক্রিস লিনের চোট। শোনা গেল, লিন-কে যে ওপেন করানো শুরু হয়েছিল, তার প্রধান কারণ ইডেনের পাল্টে যাওয়া বাইশ গজ। পেসারদের ভাল খেলেন লিন। তাঁর দুর্বলতা স্পিনের বিরুদ্ধে। তাঁর পেসের বিরুদ্ধে ভাল রেকর্ড ঘরের মাঠে কাজে লাগাতেই ওপেন করানো হয় লিন-কে দিয়ে। এখন যা অবস্থা, সেই পরিকল্পনাই ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। লিন সম্ভবত এই আইপিএলেই আর খেলতে পারবেন না।
লিনের সম্ভাব্য বদলি মনে হচ্ছে ড্যারেন ব্র্যাভো। বাঁ-হাতি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানকে এক সময় ব্রায়ান লারার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার প্রীতি জিন্টার দলের বিরুদ্ধে গম্ভীরের সঙ্গে ব্র্যাভো ওপেন করতে যান কি না, সেটাই এখন দেখার।