বিশেষ প্রতিবেদন : বাংলা নববর্ষ পালনে পাহাড়ি জনপদ অনেক আগে থেকে এগিয়ে আছে। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীরা এই নববর্ষ উৎসব বা বৈসাবি কে নিজেদের ধর্মী উৎসব মনে করে উদযাপন করে । আর এই নববর্ষ উপলক্ষে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে।
আজ চেঙ্গী নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে বর্ষবরণ উৎসব ‘বৈসাবি’ উদযাপন শুরু হবে। এ উৎসব সামনে রেখে প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামগুলোয় চলছে নানা প্রস্তুতি। হাট-বাজারে পড়েছে কেনাকাটার ধুম। পাহাড়ে বসবাসকারী বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর পাশাপাশি বাঙালিরাও এ উৎসবে অংশ নেন।
ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু উৎসবকে একসঙ্গে ‘বৈসাবি’ নামে ডাকা হয়। আগামীকাল বিজু ও পরদিন সাংগ্রাই উদযাপন হবে। এছাড়া তঞ্চঙ্গ্যা, বম, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, চাক ও রাখাইনসহ অন্যান্য নৃগোষ্ঠী স্ব স্ব আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নববর্ষকে বরণ করে থাকেন।
গতকাল খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে সকালে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। উদ্বোধন শেষে পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। এতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষ অংশ নেন।
তবে নববর্ষ উপলক্ষে গত ১ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন গ্রামে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। বৈসাবি উপলক্ষে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে গত শনিবার থেকে তিনদিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়। এছাড়া শুক্রবার থেকে খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুরু হয়েছে ২০ দিনব্যাপী পার্বত্য উদ্যোক্তা ও সংস্কৃতি মেলা। এবার কোনো ঝামেলা ছাড়াই বেশ ধুমধামের সঙ্গে নববর্ষকে বরণ করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, পরিবেশ-পরিস্থিতি ভালো থাকায় খাগড়াছড়িতে এবার উৎসবমুখর পরিবেশে বৈসাবি পালিত হবে। এ উৎসব পাহাড়ি-বাঙালি ভ্রাতৃত্ব বন্ধন আরো সুদৃঢ় করবে।
বৈসাবি উৎসব উদযাপনে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ফুল ভাসানো ও প্রদীপ প্রজ্বলন এর মধ্যে অন্যতম। বৈসাবি উৎসবকে সামনে রেখে জেলার হাট-বাজারে কেনাকাটা বেড়েছে। এ উৎসব উপলক্ষে খাগড়াছড়ির হোটেল-মোটেল আগাম বুকিং হয়ে গেছে।