ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেই বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির আবদার!

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

81086_medical

 

মেডিকেল করেসপন্ডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম:পাস-ফেল যা-ই হোক, এমবিবিএস বা বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেই বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টালে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার আবদার উঠেছে। গত বুধবার এই আবদার নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করেছেন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ মালিকদের সংগঠন বিপিএমসিএর নেতারা। এর দুই দিন আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকেও এই আবদারের কথা লিখিতভাবে জানিয়েছে সংগঠনটি।
ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, ভর্তি পরীক্ষায় ৪০-এর নিচে নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীরা বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হতে পারবেন না। প্রায় একই রকম নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলও (বিএমডিসি)। এতে বলা হয়, প্রতিটি বেসরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজ ও ইনস্টিটিউটকে অবশ্যই মেধাক্রম অনুসারে ছাত্র ভর্তি করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) একই রকম দাবি তুলেছিল। কিন্তু সরকার, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনড় অবস্থানের কারণে তাদের সেই দাবি পূরণ হয়নি। জানা গেছে, এবারও ভর্তির ন্যূনতম নম্বর ৪০-এর নিচে না নামাতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ), চিকিৎসকদের নিবন্ধনদানকারী প্রতিষ্ঠান বিএমডিসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শর্ত না মেনে মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়া ও বেশ কিছু কলেজের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে এবার ভর্তি পরীক্ষায় ১০০-এর মধ্যে ৪০ নম্বর পেতেই হবে, এ শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়। তবে বিপিএমসিএ শুরু থেকেই এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছে।
গত সোমবার বিপিএমসিএর নেতারা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে দেখা করে শর্ত শিথিলের অনুরোধ জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে লেখা তাঁদের চিঠিতে বলা হয়, গত বছর বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে ১২০ নম্বর পেলেই ভর্তির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। সেই সময় ৫৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পাস করেছিলেন। তার পরও ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ আসন ফাঁকা ছিল। এ বছর ভর্তির জন্য পাস নম্বর ৪০ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু পাস করেছেন ২২ হাজার ৭৭৯ জন। এতে করে দেশে চিকিৎসা শিক্ষার সুযোগ না পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা বিদেশে চলে যাবেন। চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়নের নামে জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও দাবি তাঁদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমডিসির নিবন্ধক জেড এইচ বসুনিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তির নম্বর কত হবে, এ বিষয়ে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সর্বসম্মতিক্রমে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত যেন মানা হয়, বিএমডিসি সেটা নিশ্চিত করবে।
বিপিএমসিএর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রগুলো বলছে, গত বুধবার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি দুই সপ্তাহ ধৈর্য ধরার কথা বলেছেন। অধিদপ্তরের চিকিৎসা শিক্ষা পরিচালক এ বি এম আবদুল হান্নানও তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে দাবি করেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
বিপিএমসিএর সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তির নম্বর কমালে শিক্ষার মান কমে যাবে না।
এ বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) এ বি এম আবদুল হান্নান বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। মন্ত্রণালয় জানে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দীন মো. নুরুল হুদার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যসচিব সদ্য যোগ দেওয়ায় ভর্তি-প্রক্রিয়া দেখভালের দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *