স্বাস্থ্যগত টিপস : পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া একটি মুহুর্ত বাঁচা যায় না। বিশুদ্ধ পানি পান করে সুস্থ ও নিরাপদ জীবনের প্রত্যাশা সবাই করে। আপনার প্রিয় বাচ্চাটি দিনে কতটুকু পানি পান করছে ও কতটুকু পানি পান করা প্রয়োজন এটা আপনার জানা একান্ত দরকার।বাচ্চার কতটুকু পানি প্রয়োজন সেটি আসলে নির্ভর করে বাচ্চার অবস্থা, ওজন ও বয়সের ওপর।
জ্বর বা অসুখের সময় পানির বেশি প্রয়োজন। বেশি গরম পড়লে, খেলাধুলা করলে বেশি পানি দিতে হবে। ডায়রিয়াতেও প্রয়োজন বেশি পানি। অপরদিকে শরীরে পানি জমলে বা ইডিমা হলে পানি গ্রহণ কমিয়ে দিতে হয়। বাচ্চাদের কতটুকু পানি পান করা প্রয়োজন সে বিষয়ে জানাচ্ছেন ডা. আবু সাঈদ শিমুল শিশু বিশেষজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও কনসালটেন্ট ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল।
শিশুর প্রতিদিনের পানির চাহিদা
বয়স পানির চাহিদা
সাত -১২ মাস – আধা লিটার থেকে পৌনে এক লিটার
এক-তিন বছর – এক থেকে সোয়া এক লিটার
চার- আট বছর – দেড় থেকে দুই লিটার
নয় -১৬ বছর – দুই থেকে আড়াই লিটার
তবে এই পরিমাণটা হলো মোট জলীয় অংশের অর্থাৎ এটা যে পানিই হতে হবে এমন নয়। যে কোনোভাবে জলীয় অংশ শিশুর শরীরে গেলেই হলো। তাই আপনার পাঁচ বছর বয়সের বাচ্চাকে একেবারে দেড় লিটার পানি খাওয়াতে হবে, তা কিন্তু নয়। বাচ্চা যে প্রতিদিন গরুর দুধ খায়, সেই গরুর দুধে শতকরা ৮৭ ভাগই জলীয় অংশ। দইয়ের ৮৯ শতাংশ, আনারসে ৮৮ শতাংশ, কলায় ৭০ শতাংশ, আমে ৮১ শতাংশ, পটলে ৯৩ শতাংশ পানি থাকে।
সুতরাং পানি খাওয়ানো হচ্ছে না, এটা ভেবে দুশ্চিন্তা করবেন না। তবে পানির অভাব পূরণের জন্য কোল্ড ড্রিঙ্কস বা বাইরের পেকেটজাত জুস খাওয়ানো যাবে না। কোনো বাচ্চার পানি গ্রহণ কম হচ্ছে কি না সেটি প্রাথমিকভাবে বুঝবেন তার প্রস্রাব দেখে। বাচ্চা প্রতিদিন যে পরিমাণ প্রস্রাব করত পানি শূন্যতা হলে তার চেয়ে কম করবে। পানি শূন্যতার অন্যান্য লক্ষণ হলো : বাচ্চা খুব অস্থির থাকবে, চোখ ভিতর দিকে ঢুকে যাবে, জিহ্বা শুকিয়ে যাবে, নাড়ি বা পালস দুর্বল কিন্তু দ্রুত হবে ।
ছয় মাসের পর থেকেই শিশুকে বাড়তি পানি খাওয়াতে হবে। এক বছর বয়সে শিশুরা সাধারণত নিজে নিজে পানি খেতে পারে। খিচুড়ি খাওয়ানোর পর এ সময় প্লাস্টিক বা ম্যালমাইনের গ্লাসে পানি দিয়ে দিন। বাচ্চাকে রঙিন আকর্ষণীয় মেলামাইনের বা স্টিলের মগ বা গ্লাসে পানি ঢেলে ধীরে ধীরে পানি খেতে শেখান। দেখবেন, পরবর্তীকালে বাচ্চা নিজে থেকেই পানি খাবে।
মনে রাখতে হবে, ডায়রিয়া হলে চিকিৎসকের পরামর্শে দৈনিক চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণে স্যালাইন ও পানি পান করতে হবে। শিশুর যেকোনো অসুস্থতাতেও বেশি পরিমাণে পানি পান করাতে ভুলবেন না যেন।