ঢাকা; সিলেটের শিববাড়িতে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান ও তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ভ্রমণের ওপর নতুন করে সতর্কতা দিয়েছে বৃটিশ সরকার। ২৬শে মার্চ আপডেট করা ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সিলেটের শিববাড়ি এলাকায় এখনও চলছে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অভিযান। এরই মধ্যে সেখানে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। তাই বৃটিশ নাগরিকদের শিববাড়ি এলাকা পরিহার করে চলাচল করতে বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুসরণ করতে। এতে গত ২৪শে মার্চ ঢাকায় শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, এখনও বাংলাদেশে আরো সন্ত্রাসী হামলার উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।
এ হামলার টার্গেট হতে পারেন বিদেশীরা। বিশেষ করে পশ্চিমারা সরাসরি এমন টার্গেটে পড়তে পারেন। তাই পশ্চিমারা যেসব স্থানে সমবেত হন সেসব স্থান বা জনবহুল এলাকাও রয়েছে উচ্চ ঝুঁকিতে। তাই বৃটিশ নাগরিকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে এসব এলাকায় যতটা সম্ভব নিজেদের উপস্থিতি কমিয়ে আনতে। বলা হয়েছে সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করতে এবং আগেভাগে নিরাপত্তামুলক পদক্ষেপ নিতে। বৃটিশ সরকারের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস থেকে এসব পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলার পর কর্তৃপক্ষ বলেছে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বিমানবন্দরের কার্যক্রম চলছে। এতে তুলে ধরা হয় গত বছর ১লা জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার কথা। বলা হয়, ওই হামলায় জিম্মি করে ২০ জনকে ও ২ পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বৃটিশ নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, স্থানীয় মিডিয়া ও সামাজিক মিডি৩য়া অনুসরণ করতে। বৃটিশ সরকারের ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে অনেক হামলা ও গত বছর ১লা জুলাইয়ের হামলার দায় স্বীকার করেছিল দায়েশ (যার আরেক নাম আইএস)। তারা ১৭ই মার্চ আশকোনায় র্যাব কর্মকর্তাদের ওপর ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। সতর্কবার্তায় আরো বলা হয়েছে, আল কাযেদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট (একিউআইএস) গ্রুপ সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলো সক্রিয় রয়েছে। ইসলামী জীবনধারা ও দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে যায় এমন অনেক ব্যক্তিকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে তারা। বলা হয়েছে, আগের হামলাগুলোর প্রেক্ষিতে উচ্চ এলার্টে রয়েছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। ওদিকে একই সতর্কবার্তায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় ঘাটতি আছে বলে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইউকে ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্ট (ডিএফটি) এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা মূল্যায়ন করেছে। তাতে দেখা গেছে এই বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার শর্তগুলো পূরণ করা হয় নি। তা পূরণ করতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বৃটিশ সরকার। উল্লেখ্য, প্রতি বছর বাংলাদেশ সফর করেন প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার বৃটিশ।