আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) দ্বিতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররাই ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরির নেপথ্যে। এ খবর দিয়েছে মার্কিন সংবাদ ম্যাগাজিন ফরেইন পলিসি।
গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের ৯৫ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে হ্যাকাররা। তবে শেষমেশ ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার তারা চুরি করতে সমর্থ হয়। এ অর্থের কিছু অংশ পরে উদ্ধার করা গেছে। এ নিয়ে পুরো বৈশ্বিক ব্যাংকিং জগতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আর্থিক খাতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। এ ঘটনার পর অনেক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান উত্তর কোরিয়ার দিকে আঙ্গুল তুলে। অবশ্য অন্য বিশেষজ্ঞরা দ্বিমত পোষণ করেন। কিন্তু মঙ্গলবার এনএসএ’র উপ পরিচালক রিক লিজেট দৃশ্যত ওই হ্যাকের জন্য উত্তর কোরিয়াকেই দায়ী করেছেন।
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আসপেন ইন্সটিটিউট গোলটেবিল বৈঠকে লিজেট বলেন, বেসরকারী অনেক গবেষক বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাকের সঙ্গে ২০১৪ সালের সনি পিকচার্স হ্যাকের যোগসূত্র থাকার কথা বলেছেন। সনি পিকচার্স হ্যাকের পেছনে পিয়ংইয়ং-এর হাত রয়েছে বলে জোরেসোরেই দাবি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। লিজেট বলেন, ‘সনি হ্যাক ও বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাকের নেপথের হ্যাকারদের মধ্যকার ওই যোগসূত্রের দাবি যদি সত্য হয়, তার অর্থ হলো, একটি দেশ বিশ্বজুড়ে ব্যাংক ডাকাতি করে বেড়াচ্ছে। এটা বেশ বড় একটি বিষয়।’
ওই অনুষ্ঠানের মডারেটর ছিলেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জন কার্লিন। তিনি রিক লিজেটের এই মন্তব্যের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি বিশ্বাস করেন যে, কোন দেশ আসলে ব্যাংক ডাকাতি করছে?’ জবাবে লিজেট বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি করি।’
সাইবার তৎপরতা ও নজরদারিতে আমেরিকার শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা এনএসএ। উত্তর কোরিয়ার সাইবার তৎপরতা স¤পর্কে এনএসএ’র জানাশোনা বেসরকারী সংস্থাগুলোর চেয়ে অনেক বেশি বলে মন্তব্য করে ফরেইন পলিসি। এতে বলা হয়, লিজেট অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংক ডাকাতি স¤পর্কে এনএসএ’র সংগৃহীত কোন তথ্যপ্রমাণের কথা উল্লেখ করা থেকে সতর্কভাবে বিরত থেকেছেন। এ কারণেই লিজেটের মন্তব্যকে সরাসরি আমেরিকার সরকারী বিবৃতি বলা যাচ্ছে না যে, উত্তর কোরিয়া বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাকের নেপথ্যে ছিল।
খবরে বলা হয়, কিন্তু এরপরও এনএসএ-তে ৩০ বছর ধরে কর্মরত লিজেটের এ মন্তব্যের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আর এনএসএ লিজেটের এ মন্তব্যের পর অতিরিক্ত কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।