বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না হলে অন্য যেকোনো চুক্তি হবে অর্থহীন। তিনি দাবি করেন, সরকার নিজের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে অন্য দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে; যে কারণে তিস্তা চুক্তি নিয়ে দর-কষাকষি করতে পারছে না।
আজ বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের নিয়ে জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির মহাসচিব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ভারত সফরকে ফলপ্রসূ করতে হলে বিভিন্ন সমস্যা, বিশেষ করে প্রধান সমস্যা পানি সমস্যার সমাধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিস্তা হচ্ছে সবার আগে। মানুষ আশা করেছিল, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে চুক্তি করে তিস্তাসহ অন্য সব অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা বাংলাদেশ পাবে। তিস্তা চুক্তি না হলে অন্য যেকোনো চুক্তি অর্থহীন হবে। আর স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে কোনো চুক্তি মানুষ মেনে নেবে না।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় গিয়েছিল—প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ভিত্তিহীন, অসত্য, বানোয়াট। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘এ কথাগুলো বলে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কী প্রমাণ করতে চাইছেন? বাংলাদেশের নির্বাচন কি ভারতের “র”, আমেরিকার সহযোগিতা নিয়ে হয়?’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই এ ধরনের ভিত্তিহীন অসত্য কথা বলে থাকেন। এ কথাগুলোর একেবারেই ভিত্তি নেই, অসত্য-বানোয়াট।’
২০০১ সালে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনে বিএনপি জয়লাভ করেছিল—দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) যে ক্ষমতা জবরদখল করে বসে আছে, তাহলে তারাও কি ভারতের “র” আর আমেরিকার সাহায্য নিয়ে বসে আছে?’ তিনি বলেন, এ ধরনের মন্তব্য করার আগে প্রধানমন্ত্রীর ভাবা উচিত ছিল যে এ ধরনের মন্তব্য করলে দেশের ভাবমূর্তির ক্ষতি হয়। দেশের ক্ষতি হয়। রাজনীতির ক্ষতি হয়। প্রধানমন্ত্রী লাগামহীন উক্তি করেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভোট চাওয়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রীয় টাকায় হেলিকপ্টারে করে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী ভোটের প্রচার চালাচ্ছেন। অন্যদিকে, অন্য দলগুলোকে ঘরে বন্দী করে রাখা হয়েছে। বিএনপিকে জনসভা করারও অনুমতি দেওয়া হয় না। এখানে প্রমাণ হয়, দেশে গণতন্ত্র নেই। প্রধানমন্ত্রী গায়ের জোরে প্রচার চালাচ্ছেন। দলগুলোকে সভা-সমিতি, স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, জঙ্গিবাদের কারণে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁরা এই ধরনের আশঙ্কা করেন না। কারণ, নির্বাচনের বিষয়টা এখনো নিশ্চিত নয়।