ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের নামে নাম ভারতের একজন প্রকৌশলীর। এ জন্য যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাকে চাকরি দেয়া হয় নি। একটি দু’টি নয়, ৪০টি কোম্পানি তাকে চাকরি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। উপায়হীন প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন তাই এখন নিজের নাম পাল্টে ফেলেছেন। এ জন্য তিনি আদালতের স্মরণাপন্ন হন। আবেদন জানান নাম পরিবর্তনের। নতুন নাম রাখেন সাজিদ। তার নাম সাদ্দাম হোসেন হলেও ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের ইংরেজি বানান ও তার নামের বানানের মধ্যে সামান্য পার্থক্য আছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা! তাকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে- তুমি চাকরি পাবে না। অনলাইন দ্য হিন্দুস্তান টাইমসে এ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভারতের প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন ঝাড়খন্ডের জামশেদপুরের অধিবাসী। তিনি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গ্রাজুয়েশন করেছেন তামিলনাড়ুর নূরুল ইসলাম ইউনিভার্সিটি থেকে। বলেছেন, শিপিং কোম্পানিগুলো তাকে সাদ্দাম হোসেন নামের কারণে চাকরি দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। তার ভাষায়, লোকজন আমাকে নিয়োগ করতে ভয় পায়। ২০১৪ সালে আমি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেছি। আমার সহপাঠীরা সবাই চাকরি পেয়েছে। কিন্তু নামের কারণে আমি আটকে আছি। এ বিষয়ে আমি চাকরিদাতা কোম্পানিগুলোর মানব সম্পদ বিভাগে খোঁজখবর নিয়েছি। তাদের অনেকেই আমাকে বলেছেন, আমার নামেই যত্ত সমস্যা। তারা বলেছেন, এমন কোনো ব্যক্তিকে তারা নিয়োগ দেবেন না, যার নাম নিয়েই সন্দেহ ঘনীভূত হয়। অভিবাসন বিষয়ক কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তবে সাদ্দাম হোসেন নাম পরিবর্তন করে সাজিদ হোসেন নাম ধারণ করলেও এখন পর্যন্ত তিনি চাকরি পান নি। তাকে নিরন্তর সংগ্রাম করে যেতে হচ্ছে একটি চাকরির জন্য। তার পাসপোর্ট, ভোটার পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স সব কিছুতেই রয়েছে নতুন নাম। কিন্তু সমস্যা হয়েছে অন্য স্থানে। তা হলো চাকরিদাতারা তার শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র দেখতে চাইছেন। তাতে রয়েছে তার পুরনো নাম- সাদ্দাম হোসেন। এ বিষয়ে তিনি আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। সে আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা মে মাসের শুরুর দিকে। ওই আবেদনে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদগুলোতে নাম পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রথমে তার মাধ্যমিক শিক্ষা সনদ পরিবর্তন করতে হবে। এরপর গ্রাজুয়েশনের কাগজপত্র। এ বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন ওরফে সাজিদ হোসেন বলেন, অন্যের কারণে নিরপরাধ এই আমাকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, ইরাকের পঞ্চম প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালবাসা প্রকাশ করতে ইরাকে বহু মানুষের নাম রাখা হয়েছে সাদ্দাম। ১৯৭৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইরাক শাসন করেন সাদ্দাম হোসেন। এরপর ইরাক আগ্রাসনের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ফাঁসি দেয়া হয় ২০০৬ সালে।