গাইবান্ধায় ফখরুল এবার একতরফা নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না

Slider সারাদেশ
 1a6f94867982dd508bfa624849d5f493-20
গাইবান্ধা; আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আওয়ামী লীগ জানে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা জয়লাভ করতে পারবে না। ২০১৪ সালের মতো এবার আওয়ামী লীগকে একতরফা নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।
আজ শনিবার বিকেল পৌনে পাঁচটায় গাইবান্ধা শহরের পৌর পার্কের শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জঙ্গির বিরুদ্ধে কথা বললে নাকি বিএনপির গায়ে লাগে। এ বিষয়ে আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের ঘোরতর বিরোধী। এই জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করতে হলে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে। সব দলমত-নির্বিশেষে এক হয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন চাই। আমাদের অভিজ্ঞা আছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। নির্বাচন দিতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।’ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ জানে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা জয়লাভ করতে পারবে না। তাই তারা নির্বাচন দিতে চায় না। দিলেও নিজেদের মতো করে করতে চায়। আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে নিজেদের লোক দিয়ে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাত্রলীগ করতেন। গত নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন। তাই ২০১৪ সালের মতো এবার আওয়ামী লীগকে একতরফা নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।

বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১০ টাকা কেজির চাল চুরি, অনিয়ম দুর্নীতি হয়। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে পারবে না, কেউ লিখতে পারবে না। বললেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়, জঙ্গিবাদে জড়ানো হয়। কেউ লিখলে সেই পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসব লেখায় সরকার আমার দেশ পত্রিকা, চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে দিয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু দেশের কোনো উন্নয়ন হয়নি, হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের। আমি নাম বলব না, আপনারা পত্রিকায় দেখে থাকবেন, প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা পৃথিবীর ধনী লোকদের মধ্যে একজন। এ ছাড়া যারা টাকা পাচার করে, তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাও রয়েছে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে চুক্তি করতে গিয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সঙ্গে আপস করা চলবে না। আমাদের তিস্তার পানির সমাধান করতে হবে। আমরা চাই ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে পানি আনতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন বিনা অপরাধে অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। যদি কেউ অপরাধ করে থাকে, আইনের আওতায় এনে তার বিচার করতে হবে। নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে হবে।’

জেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবীব দুলু, সাবেক সাংসদ রওশন আরা ফরিদ, রংপুর মহানগর বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তাহেরুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল খালেদ, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল মান্নান মন্ডল, পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহ আলম সরকার প্রমুখ।

সভাপতি মইনুল হাসান-সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন নবী
আট বছর পর শনিবার গাইবান্ধা জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে ১৭১টি পদের মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রত্যক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি পদে চিকিৎসক মইনুল হাসান সাদিক ৬০৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনিসুজ্জামান খান পেয়েছেন ৪৮০ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে মাহমুদুন নবী ৬১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মিজানুর রহমান পান ৩৮৩ ভোট। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তিনজন নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন মোশারফ হোসেন, মনজিল মােরসেদ ও আনিসুর রহমান নাদিম।

সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল মান্নান মণ্ডল শনিবার রাত পৌনে আটটায় প্রথম আলোকে বলেন, সর্বশেষ ২০০৯ সালে জেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। মোট ভোটার ১ হাজার ১৪৮ জন। এর মধ্যে ভোট পড়েছে ১ হাজার ৯৮।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *