লাইন পাতবে বলে জমি নিয়েছিল রেল। কিন্তু যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাননি জমির মালিক, পঞ্জাবের লুধিয়ানার কৃষক, বছর ৪৫-এর সম্পূরণ সিংহ। আদালতে নালিশ জানান। কিন্তু আদালতের নির্দেশের পরেও রেল টাকা না দেওয়ায় এল এক অদ্ভুত রায়। যা শুনে যে কারও চক্ষু চড়ক গাছ হওয়ার জোগার। নর্দার্ন রেলের আস্ত একটা এক্সপ্রেস ট্রেনকেই ক্ষতিপূরণ হিসেবে ওই কৃষককে দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল লুধিয়ানার অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালত। বিচারক জসপাল বর্মার নির্দেশে ১২০৩০ নম্বর স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেসকে ক্ষতিপূরণের সম্পত্তি হিসেবে অ্যাটাচ করে নেওয়া হয়। অর্থাত্ সম্পূরণ সিংহই এখন কার্যত ট্রেনটির মালিক। এই স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস ট্রেনটি অমৃতসর এবং দিল্লির মধ্যে চলাচল করে।
২০০৭ সালের লুধিয়ানা-চণ্ডীগড় রেললাইনের জন্য জমি অধিগৃহীত হয়। তার মধ্যে ছিল সম্পূরণ সিংহের জমিও। জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪২ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন সম্পূরণ। কিন্তু ২০১৫ সালে আদালত নর্দান রেলওয়েকে বকেয়া ১.০৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলে। কিন্তু রেল সেই টাকা দেয়নি। তার পরেই এই চমকে দেওয়া রায়। শুধু স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেসই নয়, লুধিয়ানার স্টেশন মাস্টারের অফিসকেও ক্ষতিপূরণের সম্পত্তি হিসেবে অ্যাটাচ করা হয়েছে।সম্পূরণ সিংহকে মালিকানা দেওয়ার এই নির্দেশনামা সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে স্টেশন মাস্টারের ঘরে। আর স্টেশনে ট্রেনটি লুধিয়ানা ঢোকার প্রায় এক ঘন্টা আগেই সম্পূরণ তাঁর আইনজীবী রাকেশ গাঁধীকে নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে যান। আদালতের প্রতিনিধিও ছিলেন। আদেশনামা ট্রেনের চালকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রেলের এক বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ার আনুষ্ঠানিক ভাবে আদালতের প্রতিনিধির হাতে ট্রেনটিকে তুলে দেন। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে গোটা পর্বটা সেরে ফেলা হয়। সম্পূরণ বলছেন ‘ট্রেনটাকে বেশি ক্ষণ থামানো হয়নি। না হলে বহু যাত্রীকে অসুবিধায় পড়তে হতো।’
কিন্তু ট্রেনের মালিক না হয় হয়েই গেলেন সম্পূরণ। কী করবেন ওই ট্রেন দিয়ে? ট্রেন তো আর বাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না! তবে এই বেনজির রায়ের ধাক্কায় রেল এ বার ক্ষতিপূরণের টাকা তাঁকে দিয়ে দেবে বলে আশাবাদী সম্পূরণ।
রেলের বিভাগীয় এক ম্যানেজার বলছেন ‘এই ধরনের নির্দেশাবলী সব সময়ই আইন মন্ত্রকের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে।’ যা করার আইন মোতাবেকই করা হবে বলে তিনি জানান।
সুত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা