পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশের জঙ্গিদের সঙ্গে ইসলামিক স্টেট বা আন্তর্জাতিক অন্য কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর সম্পর্ক নেই।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় বিভিন্ন দেশের পুলিশপ্রধানদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে গতকাল সোমবার আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকও বলেছিলেন, আইএসের সঙ্গে এ দেশের জঙ্গিদের কোনো যোগাযোগ নেই।
সম্মেলনের প্রথম দিন গত রোববার সিঙ্গাপুরভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স অ্যান্ড টেররিরজম রিসার্চের পরিচালক রোহান গুণারত্নে বলেছিলেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা করেছিল আইএস, জেএমবি নয়।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমরা বিশ্বে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের উত্থান প্রত্যক্ষ করছি। এর “স্পিলওভার এফেক্ট” বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর উপস্থিতি নেই।’
শাহরিয়ার আলম আরও বলেন, বাংলাদেশের জঙ্গিরা হোম গ্রোন এবং আজকে পর্যন্ত বিদেশি কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের যোগাযোগের তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব বিস্তারের একটা চেষ্টা থাকতে পারে। সে জন্য বাংলাদেশ মনে করে আন্তদেশীয় সহযোগিতা থাকা দরকার। বাংলাদেশ সরকার জঙ্গিবাদ দমনে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কার্যকর সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায়।
সম্মেলনের অনুষ্ঠান শেষে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি জানান, পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের সহযোগিতায় সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো ‘ওয়ান টু ওয়ান কমিউনিকেশনে’র (সরাসরি যোগাযোগ) ব্যাপারে একমত হয়েছে। জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের তথ্য বিনিময়ের পাশাপাশি, এক দেশের জঙ্গি অন্য দেশে লুকিয়ে থাকলে তাকে হস্তান্তরে দেশগুলো কাজ করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি জানান, ফেসবুকের সঙ্গে বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করতে চেয়েছিল। ফেসবুকের নীতিমালায় কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তি করার সুযোগ নেই। তাই সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করা যায়নি। তবে ফেসবুক বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে একজন ফোকাল পয়েন্ট নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছে। ওই ফোকাল পয়েন্ট ফেসবুকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন।
তিন দিনব্যাপী বৈঠকে বাংলাদেশ বেশ কিছু দেশ ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেছে। সম্মেলনটি শেষ হয়েছে একটি যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে।
প্রশ্নের জবাবে এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘মিয়ানমার এর আগে কখনো আমাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। এবারই প্রথম তারা সাড়া দিয়েছে। মাদক সমস্যা মোকাবিলায় কাজ করতে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষরে আগ্রহ দেখিয়েছে।’ মিয়ানমার ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম ও চীন সমঝোতা স্মারক সাক্ষরে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানান আইজিপি।