একটি সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইটের ‘ভুয়া’ সংবাদের ওপর ভিত্তি করে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাঙচুর করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাঙচুর করেন জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার সংবাদভিত্তিক একটি ওয়েবসাইট ‘অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরাও ঢাবির হয়ে খেলতে পারবেন’ শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশ করে। লেখাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপে এ নিয়ে অনেকে উসকানিমূলক কথা লেখেন। লেখাটি বিকৃত হতে হতে এর অর্থ এমন দাঁড়ায় যে অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো ব্যবহার থেকে শুরু করে সব ধরনের সুবিধা পাবেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এসব ‘ভুয়া’ তথ্য পেয়ে শনিবার রাত আটটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের অর্ধশত শিক্ষার্থী জড়ো হন। তাঁরা রাস্তা আটকে অধিভুক্ত কলেজগুলোর প্রসঙ্গ টেনে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত’ প্রত্যাহারের দাবি জানান। বিক্ষোভের একপর্যায়ে টিএসসি হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বহন করা একটি বাস যাওয়ার সময় বাসের কাচ ভেঙে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
পরে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন শিক্ষার্থীদের চড়-থাপড় দিয়ে নিবৃত্ত করেন।
বাস ভাঙার প্রতিক্রিয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীকে বিক্ষুব্ধ স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায়। রোববার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নবীনগর থেকে ঢাকায় আসার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ‘চৈতালী’র পথরোধ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে বাসটি আটকে তাঁরা ভাঙচুর করেন।
তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা দাবি করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস কারা ভেঙেছে তা জানা যায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে কথা হয়েছে, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না ঘটে, সে ব্যাপারে পারস্পরিক সহযোগিতা করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, একটি ভুয়া সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়। তাঁদের বিক্ষোভের একপর্যায়ে কে বা কারা জাহাঙ্গীরনগরের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেন কোনো ঝামেলা না হয়, সে জন্য সতর্কতামূলক পূর্বপ্রস্তুতি ছিল। নবীনগর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসটি খালি আসছিল। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগরের সামনে বাসটি আটকে সামনের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। এর পেছনে সুবিধাবাদী তৃতীয় পক্ষও থাকতে পারে।