বছর ১৬ আগের নির্বাচনে তাঁর পরাজয় ও বিএনপি-জামাতে ইসলামির জোটের জয়ের জন্য ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং)-কে দায়ী করলেন শেখ হাসিনা। শুক্রবার দলের মহিলা শাখার একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামি লিগের সর্বোচ্চ নেত্রী দাবি করেন, তিনি প্রাকৃতিক গ্যাস দিতে অস্বীকার করার পরে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া সে ব্যাপারে ভারত ও আমেরিকাকে মুচলেকা দেন। আর তাই ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ও মার্কিন দূতাবাস মিলে তাঁকে হারানোর চক্রাম্ত করে।
২০১১-র নির্বাচনে মোট ভোটের ৪১.৪০% পেয়ে ১৯৩টি আসন পেয়েছিল খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। মাত্র ৪% ভোট পেলেও ১৭টি আসন পায় তাদের জোটসঙ্গী জামাতে ইসলামি। কিন্তু ৪০.০২% ভোট পেলেও মাত্র ৬২টি আসন পায় আওয়ামি লিগ। কারচুপি হয়েছে দাবি করে সেই নির্বাচনের পরে সংসদ বয়কট করেছিলেন শেখ হাসিনা।
প্রাকৃতিক সম্পদ না-দিতে চাওয়ায় তাঁকে ভোটে হারানো হয়েছিল— হাসিনা এ কথা আগে অনেক বার বললেও এই প্রথম সে জন্য ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-কে দায়ী করলেন। এ দিন তিনি বলেন, নির্বাচনের পরেই মার্কিন সংস্থা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাস তুলে ভারতকে দেওয়ার কথা বলে। যদিও নানা কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি।
সম্প্রতি বিএনপি শেখ হাসিনাকে ‘ভারতের দালাল’ বলে প্রচার করে দাবি করেছে— আসন্ন দিল্লি সফরে কী কী দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হতে চলেছে, তা প্রকাশ করতে হবে। এরই জবাবে পুরনো কথা তুলে এ দিন হাসিনা প্রশ্ন করেন, ‘‘তা হলে দালালিটা করে কে? ‘র’-এর লোক, মার্কিন দূতাবাসের লোক খালেদার দফতরে তখন বসে থাকত। আর এখন ভারতের বিরুদ্ধে ওঁর কত কথা!’’
এ দিন শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘১৯৯১-তে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরে প্রধানমন্ত্রী খালেদা বেশ কয়েক বার ভারতে ঘুরে-টুরে আসেন। যখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, গঙ্গার জল নিয়ে চুক্তির কী হল, উনি বলেন ওটা বলতেই ভুলে গিয়েছি।’’ হাসিনা দাবি করেন, তিনি ক্ষমতায় আসার পরে গঙ্গার জলের ন্যায্য হিস্যা আদায় করে নিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা এ দিন বলেন, যারা কোনও দিন ভারতের কাছ থেকে কিছুই আদায় করতে পারেনি, তারাই আবার ভারত-বিরোধী কথা বলছে। এ সব খেলা আগে তারা
অনেক খেলেছে। আবার এখন খেলতে নেমেছে।