আগেরবারের মতো এবারও শীর্ষ ধনী মাইক্রোসফটের কর্ণধার বিল গেটস। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৮ হাজার ১০০ কোটি ডলার বা ৬ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা, যা বাংলাদেশের দুই বছরের বাজেটের সমান। এবার তাঁর সম্পদ বেড়েছে ১ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পদের পরিমাণ ৪৫০ কোটি ডলার।
চীনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হুরুন গ্লোবালের গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। ১০০ কোটি ডলারের বেশি সম্পদ রয়েছে এমন ব্যক্তিদেরই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
তালিকা অনুযায়ী, ডলারের হিসাবে বিশ্বে বর্তমানে ২ হাজার ২৫৭ জন বিলিওনিয়ার (১০০ কোটি ডলারের মালিক) রয়েছেন। তাঁদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৮ লাখ কোটি ডলার, যা বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ দশমিক ৭ শতাংশ।
হুরুন গ্লোবালের তালিকা অনুযায়ী, বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের অবস্থান ১ হাজার ৬৮৫তম এবং প্রতিবেদনে তাঁকে ওষুধ খাতের ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ প্রতিবেদনের সঙ্গে পুরোপুরি একমত নন সালমান এফ রহমান।
গতকাল বৃহস্পতিবার জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান ইমপ্যাক্ট পিআর সালমান এফ রহমানের পক্ষে প্রথম আলোকে এ ব্যাপারে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে। এতে সালমান এফ রহমান বলেছেন, ‘চীনা প্রতিষ্ঠান হুরুন গ্লোবাল বলেছে, আমার সম্পদের পরিমাণ ১৩০ কোটি ডলার।
প্রতিষ্ঠানটি কীভাবে এ সম্পদের হিসাব করেছে, তা আমার জানা নেই। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বেক্সিমকো গ্রুপের নিট সম্পদের পরিমাণ এর কাছাকাছি হতে পারে। আমার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ এটা নয়।
হুরুন গ্লোবালের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত সবার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ধনীদের সম্পদই প্রায় অর্ধেক। সবার মধ্যে ৬০৯ জন রয়েছেন চীনের, আর ৫৫২ জন যুক্তরাষ্ট্রের। বেইজিংকে ‘বিশ্বের বিলিওনিয়ারদের রাজধানী বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ ছাড়া জার্মানির ধনী রয়েছেন ১০৯ জন ও ভারতের রয়েছেন ১০০ জন।
ভারতে শীর্ষ ধনীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় ১১ জন কমলেও দেশটির অবস্থান চতুর্থ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ভারতের ১০০ জনের মধ্যে ৩২ জন আবার অভিবাসী ভারতীয়। আর দেশটির রিলায়েন্স গ্রুপের অন্যতম কর্ণধার মুকেশ ধীরুভাই আম্বানির একার সম্পদই ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার, পুরো তালিকায় যাঁর অবস্থান ২১তম।
এবার মোট ধনীর সংখ্যা বেড়েছে গতবারের তুলনায় ৬৯। আর ১ হাজার ৩৭ ধনীর সম্পদ বেড়েছে। কমেছে ৭৪০ জনের সম্পদ। তবে এবারের তালিকায় নতুন মুখ এসেছেন ৩৪৩ জন। আবার গতবার তালিকায় ছিলেন এমন ২৭৬ জন এবার বাদ পড়েছেন।
গতবারের দ্বিতীয় সেরা ধনী যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ারেন বাফেট এবারও দ্বিতীয়। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৭ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। এক বছরে তাঁর সম্পদ বেড়েছে ১৫ শতাংশ। স্পেন ও মেক্সিকোর দুজন বাদ দিলে তালিকার প্রথম ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই যুক্তরাষ্ট্রের।
হুরুন গ্লোবালের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বিশ্বসেরা ধনীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশই নিজেদের উদ্যোগে ধনী হয়েছেন। এ ছাড়া ৩৪ শতাংশ ধনী নিজেরা ধনী হয়েছেন, কিন্তু শুরুর দিকে বাবা-মায়ের কাছ থেকে কিছুটা সাহায্য নিয়েছেন। ২৩ শতাংশ পৈতৃকভাবে ছোট ব্যবসায়ের মালিক থাকলেও ধীরে ধীরে তাঁরা তা বড় করেছেন। উত্তরাধিকার সূত্রে ধনী মাত্র ৬ শতাংশ, আর ৩ শতাংশ বংশগতভাবে ধনী হলেও ব্যবসায়ে তাঁদের মনোযোগ কম।
মহাদেশ অনুযায়ী ধনীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এশিয়ায়—১ হাজার ৩৮। এ ছাড়া উত্তর আমেরিকায় ৬০২, ইউরোপে ৪৮৬, দক্ষিণ আমেরিকায় ৭৫ এবং অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকায় ২৮ জন করে বিলিওনিয়ার রয়েছেন।