বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর টুইট। সে জন্য ধর্ষণের হুমকি পেয়েছেন বলেও অভিযোগ শহিদ-কন্যা গুরমেহের কৌরের। আজ আবার তাঁর অন্য একটি টুইট নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সহবাগ-সহ অনেকে।
তার ফলে এবিভিপি-র বিরুদ্ধে আন্দোলন নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে টুইটার যুদ্ধ।
এবিভিপি-র চাপে রামজস কলেজে রাষ্ট্রদ্রোহে অভিযুক্ত জেএনইউ পড়ুয়া উমর খালিদের অনুষ্ঠান বাতিল হয়। তার পরেই বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষাবিদদের একাংশের সঙ্গে গোলমাল শুরু হয়েছে এবিভিপি-র। বিরোধীদের অন্যতম অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল কার্গিল শহিদ ক্যাপ্টেন মনদীপ সিংহের মেয়ে গুরমেহেরের টুইট। পোস্ট করা ছবিতে একটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গুরমেহের। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘‘আমি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। আমি এবিভিপি-কে ভয় করি না।’’
গুরমেহেরের অন্য একটি টুইট নিয়ে আজ শুরু হয়েছে বিতর্ক। তাতেও প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে তিনি। প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘‘আমার বাবাকে পাকিস্তান মারেনি, মেরেছে যুদ্ধ।’’ সেই টুইটকে খোঁচা দিয়ে বীরেন্দ্র সহবাগ টুইট করেন, ‘‘আমি নয়, আমার ব্যাটগুলি দু’টি তিনশো করেছে।’’ সহবাগের বক্তব্য রি-টুইট করেন অভিনেতা রণদীপ হুদা। গুরমেহেরের পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্যে টুইটারে ঝড় ওঠে।
বিজেপি নেতারা সরাসরি আক্রমণ করেন গুরমেহেরকে। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর কথায়, ‘‘দেশের সংহতি নষ্ট করে এমন বাগ্স্বাধীনতায় আমরা বিশ্বাস করি না।’’ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর দাবি, ‘‘কে ওই তরুণীর (গুরমেহের) মনকে দূষিত করছে তা খুঁজে বার করতে হবে। মনে রাখতে হবে ভারত কোনও দেশকে আক্রমণ করেনি।’’ বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার মতে, এ বার দাউদ ইব্রাহিমও বলবে ১৯৯৩ সালে মুম্বই বিস্ফোরণে নিহতদের সে মারেনি। মেরেছে কিছু বিস্ফোরক।
গুরমেহেরের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস। রাহুল গাঁধীর কথায়, ‘‘স্বৈরতান্ত্রিক ভয়ের এই বাতাবরণে আমরা ছাত্র সমাজের পাশে রয়েছি। অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে আওয়াজ যেখানে উঠবে, সেখানেই গুরমেহের কৌররা জন্ম নেবেন।’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণের হুমকি নিয়ে আজ দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান স্বাতী মালিবালের কাছে অভিযোগ জানান গুরমেহের। তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে দিল্লি পুলিশ।