কথাগুলো বলেছেন আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর প্রধান জেনারেল জন ডব্লিউ নিকোলসন। যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি একাডেমির (ইউনাইটেড স্টেটস মিলিটারি একাডেমি) শিক্ষা ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান কমব্যাটিং টেররিজম সেন্টারকে (সিটিসি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
একিউআইএসের আঞ্চলিক তৎপরতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জেনারেল নিকোলসন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে। আর এ অবস্থায় বাংলাদেশের অস্থিতিশীলতা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা বাংলাদেশে একিউআইএসের প্রচুর তৎপরতার প্রমাণ পেয়েছি।’
নিকোলসন এ কথার প্রমাণে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে কান্দাহারের শোরাবাক জেলায় পরিচালিত একটি অভিযানের কথা বলেন। সেখানে এক শিবিরে একিউআইএস এবং তালেবান জঙ্গিরা একসঙ্গে কাজ করছে বলে প্রমাণ পান তাঁরা। ওই অভিযানের সময়ই একিউআইএস নেতৃত্বের সঙ্গে বাংলাদেশের নিবিড় যোগাযোগের বিষয়টিও তাঁদের কাছে ধরা পড়ে।
জন ডব্লিউ নিকোলসন বলেন, একিউআইএসের ডেরায় অভিযানের পর তারা বাংলাদেশে এই সংগঠনের অনুসারীদের কর্মকাণ্ড নিয়ে অভিনন্দনসূচক নানা নোট পান।
আফগানিস্তানে ন্যাটো প্রধান বলেন, মূল আল-কায়েদার সঙ্গে একিউআইসের যোগাযোগ রয়েছে। আল-কায়েদার শীর্ষ নেতৃত্বের টিকে থাকার বিষয়টির ওপরই এখন জোর দিয়েছে সংগঠনটি। তবে তাদের সঙ্গে একিউআইএসের সম্পর্কও অটুট রয়েছে। তাদের উভয়ের এজেন্ডা ও লক্ষ্য একই।
নিকোলসনের এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, একিউআইএসের বাংলাদেশে তৎপরতার বিষয়টি তারা যাচাই করে দেখবেন।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে আল-কায়েদার নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা (একিউআইএস) প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এর পরপরই বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম (সাবেক নাম আনসারুল্লাহ বাংলাটিম) একিউআইএসের অধিভুক্ত হয় বলে তখন ঢাকায় জঙ্গিবাদ দমনে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ একাধিক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেছিলেন। আনসার আল ইসলামও তাদের টুইটার পেজে নিজেদের একিউআইএসের বাংলাদেশ শাখা দাবি করে। আনসারুল্লাহ বা আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১৩টি হামলার ঘটনায় স্বীকার করেছে। এসব ঘটনায় নিহত হন ১১ জন। যাঁদের বেশির ভাগই ব্লগার। এর বাইরে রয়েছেন প্রকাশক, শিক্ষক ও সমকামীদের অধিকারকর্মী।