এর আগে সিলেট ও খুলনা বিভাগের কারাগারে দীর্ঘদিন ধরে ১০ বন্দীর কারাগারে থাকার বিষয়টি ৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইড কমিটির আইনজীবী। শুনানি নিয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এই ১০ জনকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুল দেন। মামলার নথি তলব ও এই ১০ বন্দীকে ২৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে কেরানীগঞ্জের কারাগার থেকে ১০ বন্দীকে হাইকোর্টে হাজির করা হয়। হাইকোর্ট এসব বন্দীর বক্তব্য শোনেন।
শুনানির সময় দেখা যায় চারজন বন্দীকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আনা হয়েছে। এ সময় আদালত জানতে চান, কেন ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়েছে। আদালত সেগুলো খুলে ফেলতে বলেন। সে সময় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা রাজ্জাক বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ পরিয়ে দিয়েছে। আদালত প্রশ্ন করেন, সাজা হয়েছে কি না? জবাবে উপস্থিত এক বন্দী বলেন সাজা এখনো হয়নি। এরপর আদালত ডিআইজি প্রিজনকে তলবের আদেশ দেন।
আদালতে লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী সৈয়দা সাবিনা আহমেদ মলি শুনানি করেন। ১০ জনের মধ্যে ৯ জন জনের সংশ্লিষ্ট মামলার নথি না আসায় ওই সব নথি আগামী ৯ মার্চের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপর একজন ফারুক হোসেনের মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তিনি জামিন আবেদন করলে তা বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। ৯ মার্চ পরবর্তী আদেশের জন্য বিষয়টি আসবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
আইনজীবীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, এই ১০ জন আসামির মধ্যে মৌলভীবাজারের ফারুক হোসেন এক হত্যা মামলায় ২০০৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন, অপর এক হত্যা মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেলিম মিয়া ২০০৫ সালে ২১ এপ্রিল থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন, ২০০৩ সালের ৩ মার্চ থেকে আরেকটি হত্যা মামলায় একই কারাগারে আছেন রাজু জগনাথ, ২০০৩ সালের ৪ জুলাই থেকে এক হত্যা মামলায় একই কারাগারে আছেন বশির উদ্দিন। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের এক মামলায় ২০০৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে হাবিবুর রহমান, ২০০৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে মনিরুজ্জামান মুন্না ২০০৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নাসির উদ্দিন এবং ওই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে গিয়াসউদ্দিন সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে আছেন। এ ছাড়া হত্যা মামলায় মো. হায়দার আলী ১৯৯৮ সালের ১০ মার্চ থেকে ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে আছেন। আরেকটি হত্যা মামলায় ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে মো. রফিকুল ইসলাম রাজা পিরোজপুর জেলা কারাগারে আছেন।