‘চ্যালেঞ্জ এখনো ২০ উইকেট নেয়া’

Slider খেলা সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী
54697_s1

 

 

 

 

 

মোহাম্মদ আশরাফুল ও তালহা জুবায়ের দু’জনের অভিষেক শ্রীলঙ্কা টেস্টে। ২০০১ সালে লঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে কনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি করেন আশরাফুল। বিদেশের মাটিতে তার ক্যারিয়ারের বাকি দুটি সেঞ্চুরিও এখানেই। আর পেসার জুবায়ের ২০০২ সালে অভিষেক ও তার পরের ম্যাচ মিলিয়ে পান ৫ উইকেট। কিন্তু এই দু’জনই এখন ঝরেপড়া। আশরাফুলের বিদায় লঙ্কার মাটিতে শেষ টেস্টে সেঞ্চুরি করে। ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে তার ঝরেপড়ার গল্পটা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। অন্যদিকে জুবায়ের শিকার ইনজুরি ও অবহেলার। এই পর্যন্ত ১৬ টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রাপ্তি বলতে দুটি ড্র। যার প্রথমটি ২০১৩ সালে গল স্টেডিয়ামে। চার বছর পর আবারও শ্রীলঙ্কায় পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে যাচ্ছে টাইগাররা। টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ সেই গলে। যেখানে আশরাফুল তার ক্যারিয়ার সেরা ১৯০ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন। এরপরই কলম্বোর পিসারা ওভালে টাইগাররা খেলবেন বাংলাদেশের ১০০তম টেস্ট। ইতিমধ্যে  ঘোষণা হয়েছে ১৬ সদস্যের দল। ক্রমেই বিশ্বক্রিকেটে নিজেদের প্রমাণ করতে থাকা বাংলাদেশ কেমন করবে এই সফরে? এ দুই ক্রিকেটার কথা বলেন মানবজমিন স্পোর্টসের সঙ্গে।
এবারের শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে মোহাম্মদ আশরাফুল আশাবাদী। যদিও তার মতে চ্যালেঞ্জও আছে। তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন আমরা শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার আগে বলতাম ভালো খেলবো, জয়ের চেষ্টা করবো। এবার কিন্তু পরিস্থিতি ভিন্ন। এখন বাংলাদেশ দল যেকোনো মাটিতে জয় পাওয়ার ক্ষমতা রাখে। বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে। সেই হিসেবে বলবো অন্তত ওয়ানডে সিরিজ জয়ের কথা এবার ভাবা যায়। টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কাকে হারানো কঠিন হবে। ওদের শেষ দুই সিরিজে সেটি প্রমাণ করেছে। আর টেস্টে এখনও আমরা উন্নতি করছি। সেই ক্ষেত্রে বলতে পারি, ড্র করতে পারলেও দলকে সফল বলবো।’ টেস্ট সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে শ্রীলঙ্কা সফর। আশরাফুল বলেন, ‘আসলে আমাদের এখনও বোলিং বিভাগ নিয়েই ভাবতে হয়। ধরে নেন যদি সেখানে টেস্টে ব্যাটিং উইকেট হয়। তাহলে আমাদের ২০ উইকেট নেয়ার মত বোলার নেই। যদিও দলে এবার মোস্তাফিজ আছে। সঙ্গে যদি সাকিব বড় অবদান রাখতে পারে সেই ক্ষেত্রে টেস্টে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া সম্ভব।’ দলের ব্যাটিং নিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘এখন দলে যারা সিনিয়র ক্রিকেটার আছেন তারা সবাই অভিজ্ঞ। বিশেষ করে সাকিব, মুশফিক, তামিম, মাহমুদুল্লাহরা ক্ষমতা রাখে সেঞ্চুরি ডাবল সেঞ্চুরি করার। আসলে তাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।’ নিজের ১৯০ রানে আউট হওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘আমাদের সেট হয়ে আউট হওয়ার বিষয়টি এখনও কমেনি। খেয়াল রাখতে হবে ৯০ হলে যেন সেঞ্চুরি হয়, ১৮০ হলে সেটি যেন ডাবল সেঞ্চুরি হয় সেটিই মাথায় রাখতে হবে। আমি মনে করি না লঙ্কার কন্ডিশন আর উইকেট কোনোটাই আমাদের জন্য কঠিন হবে।’
‘পেসারদের দায়িত্ব নিতে হবে’-তালহা জুবায়ের
শ্রীলঙ্কাতে এবার পাঁচ পেসার নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এক সময় উপমহাদেশের কন্ডিশনে স্পিনারদেরই দলে আধিক্য ছিল। তবে সাম্প্রতিক ক্রিকেটে পেসাররা দারুণ পারফরম্যান্স করায় এখন তাদের উপরই নির্ভরতা বেশি। এই বিষয়ে তালহা জুবায়ের বলেন, ‘সব কিছু বিবেচনা করেই দলে পাঁচজন পেসার রাখা হয়েছে। তবে আমি মনে করি টেস্টে যদি মোস্তাফিজ খেলতে পারে সেই ক্ষেত্রে তার সঙ্গে তাসকিন। আর তিনজন পেসার নিয়ে খেললে আমি বলবো যেন রুবেল হোসেনকে, নয়তো শুভাগতকে একাদশে সুযোগ দেয়া হয়।’ কিন্তু সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ও ভারত সফরে দল আস্থা  রাখে তরুণ কামরুল ইসলাম রাব্বির উপরই। এই পেসার বল হাতেই নয়, ব্যাট হাতেও দারুণ করেছেন। কিন্তু রাব্বিকে কেন নয়, এই প্রশ্নের জবাবে জুবায়ের বলেন, ‘রাব্বি খারাপ বোলিং করে তা নয়, আর তার ব্যাটিংটা আমাদের হয়তো শ্রীলঙ্কাতে প্রয়োজন হবে না। ওকে বলবো আরো ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হবে। কারণ ওর বোলিংয়ে এখনও অনেক কাজ করা বাকি। বিশেষ করে রিভার্স সুই করানোটা ওর জন্য সহজ। আর শুভাশিষ কিন্তু ঘরোয়াতে বেশ ভালো বল করেছে।’ লঙ্কা সফরে চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলেন, ‘এখন আমাদের ব্যাটিং নিয়ে খুব একটা চিন্তা নেই। বোলিংটা কিন্তু এখনও বিশ্বমানের হয়নি। টেস্টে ২০ উইকেট নেয়া এই দল নিয়ে খুব কঠিন হবে। বিশেষ করে পেসারদের দায়িত্ব নিতে হবে। আর একটা বিষয় হলো শ্রীলঙ্কা দলে এখন আমাদের তুলনায় অভিজ্ঞ ক্রিকেটার কম। সেই হিসেবে তাদের বিপক্ষে আমাদের অভিজ্ঞরা কি করতে পারে সেটিই হবে আসল চ্যালেঞ্জ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *