নারায়ণগঞ্জ; নারায়ণগঞ্জে ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের তালিকাভুক্ত এক সন্ত্রাসী সহযোগীসহ নিহত হয়েছে। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ছোঁড়া গুলিতে ডিবি পুলিশের এএসআই আজিজ পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলো- পাগলা এলাকার ত্রাস চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং ভাড়াটে খুনি হিসেবে পরিচিত মোক্তার হোসেন ওরফে কিলার মোক্তার (৪০) এবং তার সহযোগী মানিক (৩৫)। ঘটনাটি ঘটেছে সন্ধ্যায় ফতুল্লার পাগলার দেলপাড়া এলাকার বোর্ড মিল সংলগ্ন মতিন হাজীর বাড়ির সামনে। ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। সম্প্রতি ওই এলাকায় সন্ত্রাসী এবং মাদক ব্যবসায়ীদের তা-বে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল স্থানীয় এলাকাবাসী। নিহত মোক্তার এবং মানিকের বিরুদ্ধে আলোচিত বিল্লাল হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে ফতুল্লা মডেল থানায়। নিহতরা ফতুল্লা মডেল থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। নিহত সন্ত্রাসীরা ওই এলাকার খোকন বাহিনীর সদস্য বলে জানা গেছে। বন্দুকযুদ্ধের পর পুলিশ ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ২ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি রিভলবার এবং ২টি চাপাতি উদ্ধার করে।
ডিবি পুলিশের এসআই মাজহারুল ইসলাম জানান, ফতুল্লার পাগলার বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা সক্রিয় হয়ে উঠায় বুধবার সন্ধ্যায় ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়। ওই সময় ওই ২ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী রিকশাযোগে যাচ্ছিল। পুলিশ তাদের ধাওয়া করলে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ডিবি পুলিশের এএসআই আবদুল আজিজ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ পাল্টা গুলি ছোড়ে। ১০/১৫ মিনিট গুলি বিনিময়ের পর সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়া বন্ধ করে দেয়। তখন পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে দেলপাড়া বোর্ড মিল সংলগ্ন মতিন হাজীর বাড়ির পাশ থেকে গুলিবিদ্ধ মোক্তার ও মানিকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে। তাদের পাশেই পড়ে ছিল ২ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি পিস্তল এবং ৬ রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি রিভলবার ও ২টি চাপাতি। গুলিবিদ্ধ এএসআই আবদুল আজিজকে গুরুতর আহতবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, নিহতরা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি এবং ভাড়াটে খুনি হিসেবে পরিচিত। তাদের নিয়ন্ত্রণে ফতুল্লার পাগলার দেলপাড়া, শাহীবাজার, নূরবাগ এবং আমতলী এলাকা ছিল। গত ৩/৪ দিন আগে পাশের রসূলপুর এলাকায় হামলা চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা ত্রাস সৃষ্টি করে। মাদক ব্যবসায়ীদের গুলি ও বোমার আঘাতে ১০ জন আহত হয়েছিল।
২০১৫ সালের ২৩শে অক্টোবর জাহাঙ্গীর হোসেন ও বশির খান, একই বছরের ৩রা অক্টোবর পাগলা শাহীবাজার এলাকা থেকে বিদেশি পিস্তলসহ ইসমাইল হোসেন লাল (৪০) এবং গত বছরের ১লা নভেম্বর আকতার হোসেন নামে কিলার মোক্তারের চার সহযোগী পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। নিহত কিলার মোক্তার বাহিনীর অন্য সদস্যরা হলো-খোকন, সুরুজ, তানভির, অনিক, লোকমান, নিজাম, সোহরাব, শাকিল, লিটন, পাকনা শাকিল, রাসেল ও রাজিব গং।