প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু এক ব্যক্তির স্বার্থে আঘাত লাগায় পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন সরিয়ে নিয়েছিল। তা না হলে দেশ আরও এগিয়ে যেত। আরও উন্নয়ন হতো, বাড়ত জিডিপি।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) নিয়মিত বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন।
পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতি অভিযোগ কানাডার আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা ব্যক্তির স্বার্থে আঘাত লাগল বলে সেই ব্যক্তিটি দেশের এত বড় এক মূল্যবান প্রজেক্ট যার ফলে আমার দক্ষিণাঞ্চলে সার্বিক মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হতে পারত, আমাদের জিডিপিতে আরও এক ভাগের ওপর সংযুক্ত হতে পারত। আমি মনে করি আমি যখন শুরু করেছিলাম, তখন এটা করতে পারতাম তাহলে এত দিনে এটা নির্মাণ শেষ হয়ে যেত। আমাদের জিডিপিতে আরও ১ পার্সেন্ট সংযুক্ত হতো। আমরা ৮ ভাগে চলে যেতে পারতাম। সেই সম্ভাবনাকে ব্যাহত করে দিয়েছে।’
পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক সচিবকে জেল খাটতে হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আমাদের ওপর যে মিথ্যা একটি অভিযোগ দিয়েছিল, তাদের এই মিথ্যা অভিযোগে আমাদের একজন সচিবকে অযথা একটা বছর জেল খাটতে হয়। দেশ তাঁর কাছে যে সেবাটা পেত সেখান থেকেও দেশকেও বঞ্চিত করল মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে। কাজেই এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।’
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুললে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে তখনকার যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছে অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। তবে প্রথম থেকেই বাংলাদেশ সরকার দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছিল। বিশ্বব্যাংকের সরে দাঁড়ানোর চূড়ান্ত ঘোষণার এক দিন আগেই নিজস্ব অর্থায়নে এই পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ সরকার। নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু হচ্ছে। ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
তবে এই প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ খারিজ করে শুক্রবার কানাডার আদালত বলেছেন, এই মামলায় কোনো প্রমাণ হাজির করা হয়নি। প্রমাণ হিসেবে যেগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো অনুমাননির্ভর, গালগল্প ও জল্পনা।