ওমর ফারুক ভুইয়া সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর বুকে জেগে ওঠা ৩০চরে চলতি মওসুমে ১ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় দুই হাজার মেট্রিক টন চীনা বাদাম উৎপাদনের, লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ করা হয়েছে ৬০৫ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার ৮০ মেট্রিকটন বাদাম উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। হেক্টরের উৎপাদন হবে ১.৬ মেট্রিকটন। বাদামের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। চীনা বাদাম চাষ করে চরের প্রায় ১ হাজার ভূমিহীন বর্গাচাষি ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। উপজেলার পূর্ব পাশ দিয়ে প্রবাহিত যমুনার চরে এ বছর বাদাম চাষ করেছেন ৩ থেকে ৪ হাজার চাষি। যমুনা নদীর ভাঙনে কাজিপুরে বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করে আসছিল। বাদাম চাষ করে নদীভাঙা মানুষের মুখে এখন হাসি ফুটেছে। কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর চরাঞ্চলের পলিযুক্ত বেলে-
দোআঁশ মাটিতে ১ হাজার হেক্টর জমিতে সাড়ে ১৬ হাজার মেট্রিকটন বাদাম উৎপন্ন হয়। বাদাম চাষ করে চরাঞ্চলের প্রায় ২ হাজার ভূমিহীন বর্গাচাষি পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা। বাদামের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় চাষিরা লাভবান হয়েছেন। তবে চলতি মওসুমে গত বছরের চেয়ে
কম জমিতে বাদাম আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারো বাদামের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষি
অফিসের কর্মকর্তারা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, যমুনার বুকে জেগে ওঠা নাটুয়ারপাড়া, ঘোড়াগাছা, রেহাইশুড়িবেড়, পানাগাড়ী, চরপানাগাড়ী,তেকানী, খাসরাজবাড়ী, যুক্তিগাছা, বিশুড়ীগাছা, গোদারবাগ, রাজবাড়ী, চরজগন্নাথপুর, উত্তর ছালাল, ভেটুয়াজগনাথপুর, ভানুডাঙ্গা,আফানিয়া, ঝুনকাইল, তারাকান্দি, ভাটিমেওয়াখোলা, সুতানারাশ্রীপুর, ফুলজোড় কান্তনগর, জোড়বাড়ী, বাউড়ামারী, গোয়াল বাথান,বাঁশজান, খাসখুশিয়া, মাজনাবাড়ী, শালগ্রাম, শালদহ, চরছিন্না, চরগিরিশ, রঘুনাথপুর, নিশ্চিন্তপুর, শুভগাছা, মাইজবাড়ী, পীরগাছা, সানন্ধাসহ ছোট-বড় ৩০টি চরের ৬০৫ হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম চাষ হয়েছে। বাদাম চাষী হাশেম আলী, আব্দুল মজিদ, তোজাম, আফজাল হোসেনের সাথে কথা বলে
জানা যায়, চরাঞ্চলে চীনাবাদাম চাষের সম্ভাবনার পাশাপাশি রয়েছে নানা সমস্যা। বীজসঙ্কট বাদাম চাষের প্রধান সমস্যা। চাষীরা স্থানীয়ভাবে দেশীয় পদ্ধতিতে বাদামবীজ সংরক্ষণ করায় অনেক সময় ভালো ফলন পাওয়া যায় না। চরাঞ্চল হওয়ায় বাদাম চাষে কৃষি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে বাদাম চাষীরা অভিযোগ করেন।
কাজিপুর কৃষি কর্মকর্তা জানান, আবহাওয়া অনূকূলে থাকা ও সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় এ বছর বাদামের দানা পুষ্ট হয়েছে। এ বছর চীনাবাদাম গাছে তেমন কোনো রোগবালাইয়ের আক্রমণ নেই। ফলে এ অঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা করেন।