পাঁচ নির্বাচন কমিশনারের সারসংক্ষেপ

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

0f48da96a61cc458cb7afb4ba8d72b9d-22

ঢাকা;  নির্বাচন কমিশনে নতুন নিয়োগ পেয়েছেন তাঁরা পাঁচজন। শপথ নেবেন ১৫ ফেব্রুয়ারি। নিয়োগ পাওয়া এই পাঁচজনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরা হলো

কে এম নুরুল হুদা
বিএনপির সময় বাধ্যতামূলক অবসর
নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ পাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের সাবেক কর্মকর্তা কে এম নুরুল হুদাকে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে যুগ্ম সচিব থাকা অবস্থায় আরও বেশ কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছিল। পরে এর বিরুদ্ধে মামলা করে জয়ী হন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে ভূতাপেক্ষ সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয় তাঁকে। বিসিএস ১৯৭৩ ব্যাচের কর্মকর্তা নুরুল হুদা চাকরিজীবনে ফরিদপুর ও কুমিল্লা জেলার প্রশাসক ছিলেন। তিনি সংসদবিষয়ক সচিবালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ছিলেন। এ ছাড়া বিলুপ্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র কে এম নুরুল হুদার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফলে। নুরুল হুদার পরিবার বর্তমানে ঢাকার উত্তরায় থাকে।

মাহবুব তালুকদার

লেখক হিসেবে বেশি পরিচিত
বিএনপির তালিকা থেকে নির্বাচন কমিশনার হওয়া সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার ১৯৯৯ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেন। সর্বশেষ তিনি সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারে যোগ দেন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর সময়ে উপসচিবের মর্যাদায় রাষ্ট৶পতির ‘স্পেশাল অফিসার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর আরেক রাষ্ট৶পতি মোহাম্মদ উল্লাহর সময়ে রাষ্ট্রপতির জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তিনি সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব পান। সরকারি চাকরি করলেও লেখক, কবি ও সাহিত্যিক হিসেবেই বেশি পরিচিত। শিশুসাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারও পেয়েছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলায়।

শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী

ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা থেকে ভোটের দায়িত্বে
সেনা-সমর্থিত বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদৎ হোসেন চৌধুরীর হাত ধরে বাংলাদেশে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা হয়। তিনি ওই প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন। নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বাড়ি সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার জন্ম ১৯৫৯ সালে। ১৯৮০ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। চাকরি থেকে অবসরের পর ২০১০ সালের জুনে ইউএনডিপির হয়ে আফগানিস্তানে নির্বাচন-সংক্রান্ত একটি প্রকল্পে কাজ করেন। এবার নির্বাচন কমিশনার হলেন।

কবিতা খানম

জেলা জজ থেকে প্রথম নারী কমিশনার
আওয়ামী লীগ তালিকা থেকে নির্বাচন কমিশনার হওয়া কবিতা খানমের বাড়ি নওগাঁয়। তাঁর বাবা সেখানকার একটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। সর্বশেষ তিনি রাজশাহীর জেলা ও দায়রা জজ ছিলেন। সেখান থেকে এখন দেশের প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেলেন।

মো. রফিকুল ইসলাম

সাবেক ইসি কর্মকর্তাই এখন নির্বাচন কমিশনার
নতুন নির্বাচন কমিশনারদের একজন সাবেক সচিব মো. রফিকুল ইসলাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসচিব হিসেবে অবসর নেন। বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ২০১৩ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান। এর আগে তিনি দীর্ঘদিন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায়। ১৯৫৫ সালে জন্ম রফিকুল ইসলাম রাজশাহী কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। পরে বুলগেরিয়া থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তা চাকরিতে যোগ দেন ১৯৮৪ সালে। প্রথম চাকরি ছিল সচিবালয়ে। নতুন দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সাংবিধানিক কাজ হলো নির্বাচনের জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা। আর এটা করবে পুরো কমিশন। এ লক্ষ্যেই তাঁরা কাজ করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *