মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রীর মাধ্যমে মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের এ চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের দলসহ কতিপয় বামপন্থী দল “জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ সমন্বয় কমিটি” গঠন করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। মওলানা ভাসানীকে প্রধান করে তাঁর অবর্তমানে এই কমিটি গঠন করা হয়। আমরা প্রবাসী সরকারের সাথে সহযোগিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সেক্টরে সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও ঘাঁটি স্থাপন করার নীতি গ্রহণ করি। মুক্তিযুদ্ধকালীন সর্বসময় বর্তমান নরসিংদী জেলার শিবপুরে আমরা প্রধান কেন্দ্রস্থল করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘাঁটি স্থাপন করি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে শিবপুর অঞ্চলকে যুদ্ধের নয় মাসে পুরোপুরি মুক্ত রাখে এবং বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে একযোগে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। ঢাকা পতনের পূর্বে সমন্বয় কমিটির যোদ্ধারা পাকিস্তানিদের পরাজিত করে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ দখল করে। দেশের অন্যান্য স্থানেও তারা সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে পাকিস্তানিদের পরাজিত করে।’
চিঠিতে আরও জানানো হয়, ‘ইতিমধ্যে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা দলকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন এবং তারা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করি। আমরাও একইভাবে আমাদেরসহ শিবপুরের যারা বাদ পড়েছেন তাদের তালিকাভুক্ত করার দাবি রাখি। মুক্তিযুদ্ধে “জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ সমন্বয় কমিটি”র অংশগ্রহণের বিষয় স্বাধীনতার দলিলে উল্লেখ আছে। এ ছাড়া এ বিষয়ে আরও বই প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থায় “জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ সমন্বয়” কমিটির আমরাসহ বাদপড়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত নির্দেশ প্রদানের আবেদন করছি।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা আছে, ’৭১-র মার্চে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে তিনি (রাশেদ খান মেনন) কার্যত প্রকাশ্যে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন। পঁচিশে মার্চ পল্টনের শেষ জনসভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও পাকিস্তানি সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। পঁচিশে মার্চের কালরাতের গণহত্যার পর তিনি আর এক মুহূর্ত দেরি না করে ঢাকার অদূরে নরসিংদীর শিবপুরকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনের কাজ শুরু করেন এবং পরে ভারতে গিয়ে সকল বামপন্থী সংগঠনকে নিয়ে ‘জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ সমন্বয় কমিটি’ গঠন করে বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে প্রবাসী সরকারের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন ও মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সেক্টরে এবং দেশের অভ্যন্তরে কেন্দ্র স্থাপন করে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।