ডেস্ক রিপোর্ট; মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের মধ্যে একটি নতুন খসড়া আইন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই আইনের বিষয়বস্তু, প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পূর্ব যোগ্যতা হিসেবে প্রত্যেক প্রার্থীর মানসিক, শারীরিক ও আর্থিক অবস্থাবিষয়ক সব তথ্য আগাম প্রকাশ করতে হবে।
আইনটি এখনো লেখা হয়নি, তবে এমন একটি আইন করার যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন কংগ্রেসের নজরদারি কমিটির রিপাবলিকান চেয়ারম্যান জ্যাসন শাফেৎজ। গত বৃহস্পতিবার এই আইনের পক্ষে সহপ্রস্তাবক হিসেবে নিজের নামটি যুক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেন কংগ্রেসে বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের নেতা ন্যান্সি পেলোসি।
জ্যাসন শাফেৎজ এ রকম একটি আইনের কথা দিন কয়েক আগে ওয়াশিংটন পোস্ট-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন। প্রত্যেক প্রার্থীর মানসিক, শারীরিক ও আর্থিক অবস্থার নিরপেক্ষ নিরীক্ষার পর তা জনসমক্ষে প্রকাশিত হলে ভোটারদের পক্ষে সুবিধা হবে সঠিক প্রার্থী বেছে নিতে—এই ছিল তাঁর যুক্তি। কংগ্রেসম্যান শাফেৎজ ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, দেশের প্রেসিডেন্টের হাতে থাকে ‘পারমাণবিক কোড’, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহৃত হবে কি হবে না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব তাঁর। সে কারণে প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য বিষয়ে সব তথ্য অবগত হওয়া জরুরি।
শাফেৎজ অবশ্য বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা মাথায় রেখে তিনি এ কথা বলেননি; বরং নির্বাচনী প্রচারের সময় হিলারি ক্লিনটনের স্বাস্থ্য নিয়ে নানা কথা ওঠায় তাঁর মনে হয়েছে, বিষয়টা নিয়ে সন্দেহ দূর করতে এ রকম একটি আইনি বিধান থাকা ভালো।
ন্যান্সি পেলোসিও এই আইনের পক্ষে নিজের সমর্থন জানানোর সময় ট্রাম্পের নাম তোলেননি। তবে ট্রাম্পের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি কঠিন সমালোচনা করেন। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্পের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, হোয়াইট হাউসে এ মুহূর্তে সব সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে শ্বেত আধিপত্যবাদী হিসেবে পরিচিত ট্রাম্পের বিশেষ উপদেষ্টা স্টিভ ব্যানন। তাঁকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী প্রতিনিধি করায় পেলোসি বিস্ময় প্রকাশ করেন।
কিছুটা রহস্যময় হাসি দিয়ে পেলোসি বলেন, প্রেসিডেন্টের মানসিক সুস্থতা এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পূর্বশর্ত করার প্রস্তাবটিকে তিনি স্বাগত জানান। তিনি বলেন, যাঁর হাতে ‘পারমাণবিক কোড’ থাকবে, আমাদের অবশ্যই জানা দরকার তাঁর মানসিক অবস্থা কেমন।
পেলোসির এ মন্তব্য এমন সময় এল, যখন ট্রাম্পের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও বক্তব্য থেকে তাঁর মানসিক সুস্থতা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সলাপরামর্শ ছাড়াই তথাকথিত ‘মুসলিম নিষিদ্ধকরণ’ ঘোষণা করে তিনি এক আন্তর্জাতিক সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছেন দেশকে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপচারিতার সময় তিনি ‘মন্দ লোকদের’ নিকেশ করতে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে সেনা পাঠানোর প্রস্তাব করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরেক টেলিফোন আলাপচারিতার সময় তিনি এত তপ্ত হয়ে ওঠেন যে এক ঘণ্টার নির্ধারিত কথাবার্তা ২৫ মিনিটে থামিয়ে দেন। পরে ট্রাম্প নিজেই টুইটারে জানান, সেটি ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে বাজে টেলিফোন আলাপ। গত বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে ট্রাম্প তাঁর পুরোনো টিভি অনুষ্ঠান অ্যাপ্রেন্টিসের জনপ্রিয়তা নিয়ে নিজেকে নিজে বাহবা দেন এবং তাঁর বর্তমান হোস্ট ক্যালিফোর্নিয়ার সাবেক গভর্নর আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগারের জন্য প্রার্থনার অনুরোধ জানান। একই দিন ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার জবাবে ‘সামরিক পদক্ষেপ’ বিবেচনায় আছে বলে জানান ট্রাম্প। বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন উগ্র দক্ষিণপন্থী বক্তার উপস্থিতির প্রতিবাদে ছাত্ররা সহিংস বিক্ষোভ করায় ট্রাম্প এক টুইটার বার্তায় হুমকি দেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে অর্থায়ন বন্ধ করে দেবেন। অর্থাৎ ক্ষমতায় বসার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প হুলুস্থুল বাধিয়ে দিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের সঙ্গে ট্রাম্পের টেলিফোন আলাপ এতটা উদ্ভট ও অকূটনৈতিকসুলভ ছিল যে বর্ষীয়ান রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ জন্য কার্যত ক্ষমা চেয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান বাণিজ্যিক ও সামরিক মিত্র। সে দেশের রাষ্ট্রদূতকে ম্যাককেইন এই বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন যে এই দুই দেশ দীর্ঘদিনের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র বদ্ধপরিকর।
এদিকে রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যেও ট্রাম্প নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তাঁদের একজন হলেন রক্ষণশীল রেডিও হোস্ট এরিক এরিকসন। ম্যাককেইনের মতো কূটনৈতিক ভাষা ব্যবহারের বদলে এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, ‘এ রকম দিনে আমি নিজেই মনে মনে বলি, প্রেসিডেন্ট পেন্স, প্রেসিডেন্ট পেন্স।’
উল্লেখ্য, শারীরিক অথবা মানসিক কোনো কারণে ট্রাম্প দায়িত্ব পালন করতে অক্ষম হলে শাসনতান্ত্রিকভাবে সেই দায়িত্ব বর্তাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের ওপর।
আইনটি এখনো লেখা হয়নি, তবে এমন একটি আইন করার যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন কংগ্রেসের নজরদারি কমিটির রিপাবলিকান চেয়ারম্যান জ্যাসন শাফেৎজ। গত বৃহস্পতিবার এই আইনের পক্ষে সহপ্রস্তাবক হিসেবে নিজের নামটি যুক্ত করার আগ্রহ প্রকাশ করেন কংগ্রেসে বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের নেতা ন্যান্সি পেলোসি।
শাফেৎজ অবশ্য বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা মাথায় রেখে তিনি এ কথা বলেননি; বরং নির্বাচনী প্রচারের সময় হিলারি ক্লিনটনের স্বাস্থ্য নিয়ে নানা কথা ওঠায় তাঁর মনে হয়েছে, বিষয়টা নিয়ে সন্দেহ দূর করতে এ রকম একটি আইনি বিধান থাকা ভালো।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের সঙ্গে ট্রাম্পের টেলিফোন আলাপ এতটা উদ্ভট ও অকূটনৈতিকসুলভ ছিল যে বর্ষীয়ান রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ জন্য কার্যত ক্ষমা চেয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান বাণিজ্যিক ও সামরিক মিত্র। সে দেশের রাষ্ট্রদূতকে ম্যাককেইন এই বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন যে এই দুই দেশ দীর্ঘদিনের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সৌভ্রাতৃত্ব বজায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র বদ্ধপরিকর।
এদিকে রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যেও ট্রাম্প নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। তাঁদের একজন হলেন রক্ষণশীল রেডিও হোস্ট এরিক এরিকসন। ম্যাককেইনের মতো কূটনৈতিক ভাষা ব্যবহারের বদলে এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, ‘এ রকম দিনে আমি নিজেই মনে মনে বলি, প্রেসিডেন্ট পেন্স, প্রেসিডেন্ট পেন্স।’
উল্লেখ্য, শারীরিক অথবা মানসিক কোনো কারণে ট্রাম্প দায়িত্ব পালন করতে অক্ষম হলে শাসনতান্ত্রিকভাবে সেই দায়িত্ব বর্তাবে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের ওপর।