গ্রাম বাংলা ডেস্ক: মীর কাসেম আলীএকাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চট্টগ্রামে গণহত্যার হোতা এবং জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। রায় ঘোষণার পরপরই তিনি ট্রাইব্যুনালের উদ্দেশে তির্যক মন্তব্য করেন।
মীর কাসেম ট্রাইব্যুনালের উদ্দেশে বলেন, ‘এটা মিথ্যা ঘটনা, মিথ্যা সাক্ষী, ফরমায়েশি সাক্ষী। সত্য বিজয়ী হবে। মিথ্যা পরাজিত হবে। শিগগিরই, শিগগিরই।’
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ আজ রোববার এ রায় দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম। মামলার কার্যক্রম শেষ হওয়ার প্রায় ছয় মাস পর আজ এ রায় ঘোষণা করা হলো।
জামায়াতের রাজনীতিতে অর্থের জোগানদাতা হিসেবে পরিচিত মীর কাসেমের রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে গত বৃহস্পতিবার আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। পরদিন শুক্রবার মীর কাসেমকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।
রায় ঘোষণা উপলক্ষে আজ সকাল নয়টা ৪০ মিনিটে মীর কাসেমকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় আনা হয়। সকাল ১০টা ৪৪ মিনিটে তাঁকে হাজতখানা থেকে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় আনা হয়। সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে সূচনা বক্তব্য দিয়ে রায় পড়া শুরু করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার। বাকি ১২টি অভিযোগ অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের। ১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগের দুটিতেই তাঁর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
মীর কাসেমের বিরুদ্ধে ১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর যেকোনো দিন মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে চট্টগ্রাম শহরের অজ্ঞাত স্থান থেকে অপহরণ করে আলবদর সদস্যরা। পরে মীর কাসেমের নির্দেশে জসিমকে ডালিম হোটেলে নির্যাতন কেন্দ্রে নিয়ে নির্যাতন ও ২৮ নভেম্বর হত্যা করা হয়। পরে সেখানে নির্যাতনে নিহত আরও পাঁচজনের সঙ্গে জসিমের লাশ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
১২ নম্বর অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের নভেম্বরে মীর কাসেমের নির্দেশে আলবদর সদস্যরা চট্টগ্রামের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা হাজারী গলির বাসা থেকে রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। এ ছাড়া পাকিস্তানি সেনা ও সহযোগী রাজাকার-আলবদররা হাজারী গলির ২৫০ থেকে ৩০০ দোকান লুট ও অগ্নিসংযোগ করে।