শারমিন সরকার
ব্যুারো চীফ
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
শ্রীপুর অফিস : হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতার ক্ষত চিহ্ন নিয়ে দারিদ্র ও নিপীড়িত জীবনের অবসান ঘটিয়ে শ্রীপুরের বিরাঙ্গনা মমতাজকে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে। ভাতা পেলেও তালিকায় নাম না থাকায় তিনি পান নি রাষ্ট্রীয় সালাম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার লতিফপুর গ্রামে তার নিজ বাড়ীতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। বুধবার গভীর রাত ৩ টার দিকে পরপারে চলে গেল বীরাঙ্গনা মমতাজ বেগম (৬২)।
মমতাজের ভাতিজা ফরহাদ হোসেন জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে মমতাজ ৯ মাসের অন্তসত্তা ছিল। স্থানীয় রাজাকার দলের সহায়তায় পাক-হানাদার বাহিনীর বর্বর নির্যাতনের শিকার হন তিনি। পাক সেনারা তাকে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে লতিফপুর বেপারী বাড়ীর ব্রিজের পার্শ্বে নির্জনে তার ওপর ধারাবাহিক পৈশাচিক নির্যাতন চালায়।
একাধিক পাক-হানাদার বাহিনীর বর্বর যৌন নির্যাতনে মমতাজের পায়ুপথ ও যৌননালী চিরে-ফেরে একপথ হয়ে যায়। নির্যাতনে তার গর্ভের অনাগত শিশু পুত্র সন্তানটির মৃত্যু হয়। অসহায় স্বামী রমিজ মন্ডল স্ত্রীকে বাঁচাতে ভিটে মাটি বিক্রি করে সর্বস্ব খোয়ান। কৃত্রিম নল দিয়ে দীর্ঘ ৪৩ বছর ধরে ত্যাগ করল মলমুত্র।
স্বাধীনতার ৪০ বছর পর তিনি স্বীকৃতি পেয়েছিলেন বীরাঙ্গনার। স্বীকৃতির পর থেকে যৎ সামান্য সরকারী অনুদান ও সাহায্যে চলত তার চিকিৎসা ও ক্ষুধা নিবারণ। নরপশুদের অত্যাচার ও দারিদ্রতার যন্ত্রনা বুকে নিয়ে ৪৩ বছর পার করে বুধবার রাতে নিজ বাড়ীতে মৃত্যুকে বরন করে নিলেন মমতাজ বেগম। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্টিয় মর্যাদা ছাড়াই নিজ বাড়ীতে জানাযা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবুল কাশেম পিপিএম জানালেন, বীরাঙ্গনারা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি না পাওয়ায় রাষ্ট্রীয় সালাম দেয় হয়নি। তবে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেখানো হয়েছে।