ঢাকা; বাংলাদেশ থেকে জনবল নিয়োগকারী সৌদি আরবের কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করতে রিয়াদ ও জেদ্দায় এ মাসেই বসছে বিশেষ ‘জব ফেয়ার’। ৩০শে জানুয়ারি থেকে ১লা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ মেলার আয়োজন করছে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস। আশা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে বাংলাদেশী শ্রমিক নিয়োগে সৌদি আরবের কোম্পানিগুলো আকৃষ্ট হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, রিয়াদ ও জেদ্দায় অনুষ্ঠেয় এ মেলায় থাকবে সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্থানীয় নিয়োগকারী বিভিন্ন এজেন্টের বৈঠক। এ বৈঠক দু’দেশের মধ্যে শ্রমিক আইন ও নিয়োগ প্রণালী সম্বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি জানান, রিয়াদ জব ফেয়ারে শতাধিক স্থানীয় কোম্পানি অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া উভয় দেশের শ্রমিক সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জ্যৈষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তারাও এ মেলায় উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশি দূত বলেন, হাসপাতাল, হোটেল, মেরামত ও অবকাঠামো খাতে আমাদের শ্রমিকদের জন্য প্রায় ৫০ হাজার ভিসা আছে। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে প্রতি মাসেই বাড়ছে বাংলাদেশি পরিচারিকার সংখ্যা। এ দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪০০০ পরিচারিকা যান সৌদি আরবে। সব মিলে সৌদি আরবে এখন বাংলাদেশী গৃহপরিচারিকার সংখ্যা এক লাখ ৩ হাজার। সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রান্তে বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ বাংলাদেশি কাজ করছেন। সেদিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, প্রায় ৪৮ ধরণের পেশায় সৌদি আরবে নিয়োজিত বাংলাদেশি কর্মচারী। তারা বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন। সৌদি আরবে জীবিকার খোঁজে যাওয়া সব কর্মচারীকে ঢাকায় অবস্থিত ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার, এমভায়রনমেন্ট এন্ড ট্রেইনিং(বিএমইটি)-এ ব্যাপক অভিযোজনের সাথে গ্রহণ করা হয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, পুরো ঢাকায় এমন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে চারটি। সৌদি আরবে গৃহকর্মে যারা নিয়োজিত হন তাদেরকে আরবি শেখানো হয় এসব কেন্দ্রে। সৌদি সংস্কৃতি ও সামাজিক পরিবেশ সম্বন্ধে ধারণা দেওয়া হয়। তাদেরকে গৃহপরিচালনার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যেমন ভ্যাকিউম ক্লিনার, রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করতে শেখানো হয়। উল্লেখ্য, প্রবাসী শ্রমিকদের প্রেরিত অর্থ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে বিশাল ভূমিকা রেখেছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র হচ্ছে এই প্রেরিত অর্থ। যার পরিমাণ, ২০১১-১২ অর্থবছরে সরকারি উন্নয়নে প্রাপ্ত সহায়তার চেয়ে ১০ গুণ বেশি। বিশ্বব্যাংকের দেওয়া এক তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে রেমিটেন্স গ্রহণের দিক দিয়ে সেরা দশ দেশের মধ্যে ৬ নাম্বারে অবস্থান করেছে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ-এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হিসেবে অবস্থানে ছিলো। বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে যে, প্রবাসীদের পাঠানো এই অর্থ বাংলাদেশের দরিদ্রতার হার ১.৫ ভাগ কমাতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের প্রেরিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায়, ১৫৩২ কোটি ডলার।