রংপুর: রংপুর থেকে প্রচারিত দৈনিক যুগের আলো পত্রিকার স্টাফ রির্পোটার মশিউর রহমান উৎস খুন হওয়ার পর আলামত হিসেবে যা পাওয়া গেছে তার ডিএনএ টেস্টের দাবি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানিয়েছেন উৎস’র বাবা, মা ও বড় বোন।
তারা জানান, এক মাসের মধ্যে উদ্ধারকৃত আলামতের ডিএনএ টেস্ট করা না হলে পরিবারের সবাই প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উৎস’র বড় বোন মোরশেদা বেগম। তিনি বলেন, ‘উৎস গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রাতে নগরীর অদূরে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পশ্চিমে নৃশংসভাবে খুন হয়। খুন হওয়ার এক বছর পরেও মামলার কোন অগ্রগতি হয়নি। প্রশাসন অনেক মামলার দ্রুত রহস্য উদঘাটন করে থাকে। কিন্তু উৎস’র ঘটনায় কোনই অগ্রগতি হয়নি।’
উৎস’র মা নুরজাহান বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘উৎস আমাদের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল। তার মৃত্যুর পর আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সহয়োগিতা কামনা করছি।
উৎস’র বাবা সামছুল হুদা প্রামানিক বলেন, ‘আমার সন্তানের প্রকৃত খুনিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন মহলের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। কিন্তু বিচার পাচ্ছি না। এক মাসের মধ্যে খুনের পর উদ্ধারকৃত আলামতের ডিএনএ টেস্ট না হলে আমরা আমরণ অনশনে গিয়ে আত্মহুতি দিব।’
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আত্মীয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণ আছে জানিয়ে নগরীর জিএল রায় রোডস্থ দৈনিক যুগের আলো পত্রিকা অফিস থেকে তার ব্যবহৃত মটর সাইকেল নিয়ে চলে যায় উৎস। এরপর রাতে আর বাসায় ফেরেনি সে। পরের দিন সকালে রংপুর নগরীর ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের অদূরে রংপুর ঢাকা মহাসড়কের কাছে একটি গাছের সাথে বাঁধা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খুনিরা তাকে মূল সড়কের একশ গজ দূরে গাছের সঙ্গে বেঁধে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরদিন সকালে পুলিশ ও তার সহকর্মীরা সাংবাদিক উৎস’র লাশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় উৎস’র মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, সাংবাদিক উৎস হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন মাদক সম্রাজ্ঞীও রয়েছেন। ইতিমধ্যে মাদক সম্রাজ্ঞী জহিরুন্নেছা গেদী ও তার বডি গার্ড রিপন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে হত্যাকান্ড সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে। এ ছাড়াও উৎস ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ক্যামেরা ও মটর সাইকেলটি আজও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।