স্টাফ রিপোর্টার: পুলিশ বাহিনীর কাছে গিয়ে জনগণ যেন ভালো আচরণ পায় তা নিশ্চিত করতে বাহিনীর সদস্যদেরকে তাগিদ দিয়েছেন পুলিশ প্রধান-আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে চলতে হবে আইন কানুন বিধি বিধান অনুযায়ী। কিন্তু জনগণ প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা পায় কি না, তারা কেমন আচরণ চায় তা আমাদেরকে দেখতে হবে।’ বুধবার দুপুরে রংপুরে কমিউনিটি পুলিশের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শহীদুল হক।
দেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর মধ্যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি মিথস্ক্রিয়া পুলিশের। কিন্তু সদস্যদের নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে বাহিনীটিকে। পুলিশ জনগণের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাও দেয়া আছে সিটিজেন চার্টারে। কিন্তু পুলিশ এসব নির্দেশনার পরোয়া করে না বলে অভিযোগ আছে। থানায় গেলে যথেষ্ট সহযোগিতা না পাওয়া আর দুর্ব্যবহারের অভিযোগ পুরনো।
আইজিপি বলেন, জনগণ যেন থানায় এসে প্রত্যাশিত ব্যবহার পায় সেটা পুলিশকেই নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, জঙ্গি তৎপরতা বা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সব তথ্য জনগণের কাছ থেকেই পেতে হবে। তারা যেন নিজে থেকেই তথ্য দিতে উৎসাহী হয়, সেই পরিবেশ থাকতে হবে। পাশাপাশি জনগণকেও এলাকায় যে সব সমস্যা আছে তা পুলিশকে বলতে হবে।
আইজিপি বলেন, ‘সব নাগরিকের অধিকার আছে। কিন্তু তারা মৌলিক অধিকার ভোগ করার সুযোগ পায় না বিভিন্ন কারণে। আমাদেরকে তাদের পাশে থাকতে হবে।’
জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে উত্তরাঞ্চলে
বিশেষ নজর পুলিশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় জঙ্গিরা এখনও তৎপর জানিয়ে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার কথা জানান পুলিশ প্রধান। তিনি বলেন, ‘এই জঙ্গি এখনও রয়ে গেছে পুরো নর্থবেঙ্গলে। এখানে খেয়াল রাখতে হবে কেন জঙ্গির সৃষ্টি হচ্ছে।’
আইজিপি বলেন, ‘এই অঞ্চলে যে সব জঙ্গি ধরা পড়েছে এমনকি পুলিশের সাথে যারা বন্দুক যুদ্ধে মারা গেছে তারা হয় রংপুরের, না হয় গাইবান্ধার, না হয় বগুড়ার, না হয় পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রাজশাহীর। এই জঙ্গিরা বর্তমান যুব সমাজকে ভুল বুঝিয়ে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মগজ ধোলাই করে এদের জঙ্গিবাদের দিকে নিয়ে আসছে।’
জঙ্গিদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘জঙ্গি হোক আর মাদকসেবী হোক আপনাদের পরিবার থেকেই সচেতন হতে হবে। আপনার ছেলে মেয়ে কে কী করে, কোথায় যায় খেয়াল রাখতে হবে।’
শহীদুল হক বলেন, ‘কোনো এলাকা জঙ্গিরা এসে অস্থায়ী বসবাস করে, কিছুদিন এ এলাকায় থেকে নাশকতার কাজ করে আবার চলে যায়। কাজই আপনারা তাদের গতিবিধ লক্ষ্য রাখবেন। সুতরাং আপনারা নিজের বাড়ির পাশাপাশি প্রতিবেশি যারা আছেন তারাও খেয়াল রাখবেন। তাদের চলাফেরা বা গতিবিধি যদি সন্দেহ হয় তাহলে সাথে সাথে পুলিশকে জানাবেন। পুলিশ আপনাদের কথা শুনবে এবং আপনাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’
পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মঞ্জুর এলাহী, বসির উদ্দিনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।