ঢাকা; রাজধানীর দারুসসালাম এলাকা থেকে দুই শিশু সন্তানসহ এক মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই শিশুকে গলাকাটা অবস্থায় বিছানার ওপর এবং মাকে ঘরের সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এই মায়ের নাম আনিকা (২০)। দুই শিশুসন্তান হলো, ৫ বছরের মেয়ে শামীমা এবং ৩ বছরের ছেলে আবদুল্লাহ। গতকাল বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ছোট দিয়াবাড়ির একটি টিনশেড বাসা থেকে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে- দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর আনিকা আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ রক্তমাখা একটি বঁটি উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ৩টি ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। দারুস সালাম থানার পরিদর্শক ফারুকুল আলম জানান, আনিকার স্বামীর নাম শামীম হোসেন (৩৩)। স্ত্রী, তাদের মেয়ে শামীমা এবং ছেলে আবদুল্লাহকে নিয়ে দারুসসালাম থানাধীন ছোট দিয়াবাড়ির পানির ট্যাংক সংলগ্ন ২৯/১ নম্বর টিনশেড বাড়িতে ভাড়া থাকেন। শামীম দিয়াবাড়ি এলাকার একটি সেলুনে কাজ করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মকসুদপুরে। এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় ঘরের দরজা ভেতর থেকে আটকানো ছিল। জানালা দিয়ে দেখা যায় বিছানার ওপর দুই শিশু পড়ে আছে, তার পাশেই সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে আনিকার লাশ। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শিশু আবদুল্লাহ ও শামীমার গলা কাটা লাশ দেখা যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ছোট বঁটি উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ফারুকুল আলম আরো জানান, আনিকার স্বামী শামীম হোসেন সকালে একবার বাইরে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পরেই ফিরে আসেন। এরপর তিনি চলে যান। মিরপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মামুন মোস্তফা জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে জানালা দিয়ে দেখে প্রথমে বোঝা যায়নি যে শিশু দুটিকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের বিছানার ওপর কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। বাইরে থেকে শুধু আনিকা মারা গেছে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু ভেতরে ঢোকার পর দেখা যায় শিশু দুটিকে নির্মমভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে আনিকা তার দুই সন্তানকে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে। স্বামী শামীম হোসেনকে পাওয়া গেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মামুন মোস্তফা বলেন, এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, তিনি একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গেছেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আনিকার মৃত্যুটি হত্যা না আত্মহত্যা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে বলেও তিনি জানান।