অবশেষে খুলছে কারমাইকেল কলেজের দুটি আবাসিক হল

Slider শিক্ষা

carmaical

রংপুর: প্রায় ছয় বছর বন্ধ থাকার পর ফের চালু হতে যাচ্ছে রংপুর কারমাইকেল কলেজের আবাসিক হল।

ছাত্রদের আবাসিক হল চালুর ব্যাপারে কলেজটির অধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, হল চালুর কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। রাজা গোপাল লাল রায় (জিএল) ও কাশিম বাজার (কেবি ) নামের দুই ছাত্র হল চালুর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জিএল হলটি বর্তমানে শিক্ষার্থীদের আবাসিকতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। ডিসেম্বরে হলটির আবাসিকতা ফর্মও বিতরণ করা হয়েছে। অপর কেবি হলটিও চালুর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

তবে কবে নাগাদ চালু হতে পারে জানতে চাইলে তিনি জানান, শিগগিরই ছাত্র হল চালুর বিষয়টি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে চূড়ান্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অধ্যক্ষ আরও জানান, হলের আসন বরাদ্দের ব্যাপারে দলীয় বিবেচনা নয় বরং মেধাকেই প্রাধান্য দেয়া হবে। কলেজের ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে হল চালুর ব্যাপারে কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কলেজ প্রশাসন ও হল সূত্র জানায়, কলেজটির উচ্চ মাধ্যমিক ডিগ্রিসহ ২১টি বিষয়ে সম্মান ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসিক সুবিধায় হল রয়েছে মাত্র সাতটি। এর মধ্যে ছাত্রীদের আবাসিকতার জন্য তিনটি হল চালু রয়েছে। যার আসন সংখ্যা মাত্র ৭৫০টি।

অপরদিকে, রাজনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছাত্রদের বাকি চারটি আবাসিক হল। ফলে শতবর্ষে পদার্পণ করেও এখনো কাটেনি কলেজটির আবাসিক সঙ্কট। উল্টো দিন দিন এ আবাসিক সঙ্কট বেড়েই চলেছে। আর এ সুযোগে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠেছে ব্যক্তি মালিকানায় ছাত্রাবাস। শুধু পড়াশোনার পরিবেশ নয়, শিক্ষার্থীরা মোটা অংকের টাকা গুণেও পাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত সুযোগ-সুবিধা।

তবে সম্প্রতি কলেজ প্রশাসন জিএল এবং কেবি নামের দুইটি হল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। হল দুইটি চালুর মাধ্যমে ১৯৬টি আসনে ছাত্ররা আবাসিক সুবিধা পাবেন। এছাড়া কাজ চলছে ১০০ আসন বিশিষ্ট নতুন একটি ছাত্র হলেরও। প্রয়োজনের তুলনায় এ সংখ্যা অনেক কম হলেও আর্থিকভাবে অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীরা কম খরচে এসব হলে অবস্থানের সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে দীর্ঘ সময় পর ছাত্র হল চালুর মাধ্যমে ক্যাম্পাস প্রাণ ফিরে পাবে বলে আশা করছে কলেজ সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য মতে, ২০১১ সালে ১৫ মার্চ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোকে কেন্দ্র করে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে ছাত্রলীগের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা পর কলেজ ক্যাম্পাসের পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতে কলেজটির চারটি আবাসিক হল এক মাসের জন্য বন্ধ করে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে ছাত্র হল চালু না থাকায় একদিকে যেমন চরম আবাসন সঙ্কটে পড়েছে কলেজটির হাজারো শিক্ষার্থী। অপরদিকে ব্যাহত হচ্ছে কলেজটির মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ।

ছাত্র হল চালু হতে যাচ্ছে এমন সংবাদে কলেজটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কারমাইকেল কলেজের ঐতিহ্য বিশ্ব জোড়া। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র হল বন্ধ থাকায় কলেজটির প্রকৃত সৌন্দর্য যেন বিকশিত হচ্ছিল না। হল চালুর মাধ্যমে কলেজটির বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবাসিকতার যে দাবি ছিল তা আদায় হতে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, আমি যোগদানের পর থেকেই ছাত্র হল চালুর বিষয়টি তদারকি করছি। আশা করি এই দুইটি ছাত্র হল চালুর মাধ্যমে আবাসন সঙ্কট কিছুটা হলেও নিরসন হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *