রংপুরঃ আগামী ১৫ জানুয়ারি রংপুর ও ১৭ জানুয়ারি রাজশাহীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।সাঁওতাল পল্লীতে হামলার প্রতিবাদে রংপুর জেলা প্রশাসন বিভাগীয় সমাবেশ করার অনুমতি নাদেওয়ায় এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি
ঘোষণা করেছে আদিবাসীদের সংগঠনটি।
রংপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল পল্লীতে হামলা, আগুন লাগানো, মালামাল লুট ও তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ১০ দফা দাবিতে ৭ জানুয়ারি রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি
মাঠে বিভাগীয় সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে ১১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করলেও জেলা প্রশাসন এই সমাবেশের অনুমতি
দেয়নি। এর মাধ্যমে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন। এ সময় তিনি বলেন, গত বছর ৬ নভেম্বর গোবিন্দগজ্ঞ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের সাঁওতালদের ওপর
যে তান্ডব চালানো হয়েছিল, দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও সে ঘটনার মূল হোতা স্থানীয় সাংসদ আবুল কালাম আজাদ ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ সন্ত্রাসীদের কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। উল্টো সাঁওতাল ও গরীব বাঙালি কৃষকদের ওপর
নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পুলিশ চিহ্নিত
অপরাধীদের গ্রেফতার না করে সাঁওতালদের বাড়িতে তল্লাশী চালাচ্ছে উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নিরীহ সাঁওতালরা যেন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিতে না পারে
সেজন্য সন্ত্রাসীরা রাস্তাঘাটে পাহারা
বসিয়েছে। দুই মাস ধরে সাঁওতালরা এখনও খোলা আকাশের নিচে মানববেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। স্কুল পুড়িয়ে দেওয়ায় সাঁওতালদের
ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, গত ২৩ ডিসেম্বর সড়ক ও
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে
দেখা করে তার কাছে ১০ দফা দাবির স্মারকলিপি দেওয়া হলে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। ২৮ ডিসেম্বরের পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যাওয়ার কথা বলেন তিনি। এরপর দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সেতুমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেননি।
রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, এবার আমরা বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়া না হলে আরও কঠোর
কর্মসূচি ঘোষণা করব।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের সহ-সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, সিপিবি নেতা শাহাদত
হোসেন, ওয়ার্কাস পার্টির নেতা নজরুল ইসলাম হাক্কানী ছাড়াও সাঁওতাল পল্লীতে পুলিশের গুলিতে নিহতদের স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন।