নিরাপত্তার কারণে নিহত এমপি লিটনের পরিবার গ্রামের বাড়ি ছাড়লেন

Slider বাংলার মুখোমুখি বিচিত্র

47731_f3

 

গাইবান্ধা; চার দিনেও পুলিশ সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের খুনের মোটিভ খুঁজে বের করতে পারেনি। হতাশ পরিবারের লোকজন এবং মামলার বাদী নিজে। লিটনের একমাত্র সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে সোমবার বিকালেই সুন্দরগঞ্জ ছেড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
নিহত লিটনের ছোটবোন মামলার বাদী তাহমিদা বুলবুল কাকলী লিটনের ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সোমবার বিকালেই ঢাকা চলে যান। যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেন, এখানে কে দেবে আমাদের নিরাপত্তা? আমরাও জীবন নিয়ে হুমকির মধ্যে আছি সে কারণে আমরা বামনডাঙ্গার নিজ বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় গেলাম। এখন পুলিশ থাকলেও অপরাধীরা কি করতে পারে- তা প্রমাণ করেছে।
পুলিশ, গোয়েন্দাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লিটনের হত্যাকাণ্ডকে সামনে রেখে নানা কৌশলে কাজ করছে দিনরাত। লিটনের বাড়িতে এখন শুনশান নিরবতা। কেউ নেই। কাছের স্বজনরা সবাই চলে গেছেন- আছে শুধু চাকর আর রাখাল। তবে লিটন হত্যার প্রতিবাদে সুন্দরগঞ্জে চলছে আন্দোলন, প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ। ফুঁসে উঠেছে সুন্দরগঞ্জের সাধারণ মানুষ। তাদের বক্তব্য এমপিকে যদি তার বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়, তাহলে মাঠে সব সময় আন্দোলনকারী নেতাদের নিরাপত্তা কে দেবে। কাজেই অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক। সে কারণে প্রতিবাদ সভা থেকে বলা হয় যতদিন পর্যন্ত লিটন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হবে, ততদিন পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫ ইউনিয়নে চলবে প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি।
নিহত লিটনের বড় বোন আফরোজা বারী চাকরি করেন। থাকেন ঢাকায়। একমাত্র ছোট ভাইকে রেখেছিলেন গ্রামের বাড়িতে। বলেন, তার শত্রু ছিলো আমরা জানতাম। কিন্তু এতো বড় শত্রু ছিলো তা আমরা দূর থেকে জানতে পারিনি। জানলে তাকে আমরা এখানে আসতে দিতাম না। রাজনীতি ও মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে তাকে জীবন দিতে হলো। এ খবর কি কেউ জানতো না । তার যে এতো বড় শত্রু আছে তা কেন জানতে পারলাম না । তার জীবন রক্ষার জন্য তার বৈধ অস্ত্রটি কেন দেয়া হয়নি।
এদিকে আটককৃতদের নিয়েও নানা জল্পনা চলছে সব মহলে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা চান মিয়া জানান, প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তারের আওতায় আনা হয়নি। কয়েকদিন ধরে পুলিশ শুধু দিনমজুর, দোকান কর্মচারী আর জামায়াত সমর্থকদের আটক করে। তারপরও তারা নাম ও পরিচয় না জানিয়ে সংখ্যাও ভুল বলেছে।
তবে গাইবান্ধার পুলিশ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। পুলিশ বলছে হত্যাকারীদের ধরতে আলোর মুখ দেখলেই জানতে পারবেন। ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নিহত লিটনের নিকটতম সহকর্মী সাহাদৎ হোসেন সুজা প্রকৃত আসামি গ্রেপ্তার নিয়ে হতাশ। কুলখানীর অনুষ্ঠানে এসে দেখেন যারা জামায়াত করতেন এখন তারা নব্য আওয়ামী লীগ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমপি’র বাড়িতে এসেছেন কাঁদছেন আর দোয়া পড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। তখন যারা শত্রু ছিলেন এখন তারা দু’চোখের পানিতে বুক ভিজিয়েছে। আর তদন্ত আর তদন্ত । চার পাশে ঘরখান ঘিরে রেখে খালি শোনা আর দেখা। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *