প্রাণকৃষ্ণ বিশ্বাস প্রান্ত; বরিশাল বিভাগীয় ব্যুরোচীফ : ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের বড়ইয়া গ্রামের অগ্নিদগ্ধ দরিদ্র খাদিজা আক্তারের (২২) চিকিৎসার সার্বিক খোঁজখবর নিতে বুধবার বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গেলেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. মিজানুল হক চৌধুরী।
এসময় তার সাথে ছিলেন রাজাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো: মনিরউজ্জামান মনির। দরিদ্র খাদিজার চিকিৎসায় সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসক ১০ হাজার ও উপজেলা চেয়ারম্যান ৫ হাজার টাকা খাদিজার মা কুলসুম বেগমের হাতে তুলে দিলেন। বার্ন ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: মোঃ হাবিবুর রহমান এর উপস্থিতিতে এ সময় খাদিজার চিকিৎসার জন্য আরও আর্থিক সহায়তা করেছেন সিলেট জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট সিএমএইচ’র ডাক্তার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহজাবিন আরা, ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ রাজ্জাক সেলিম, সোহাগ ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মোঃ আহসান হাবিব সোহাগ, কেরানিগঞ্জ ইস্পাহানি ইউনিভার্সিটি এন্ড কলেজের প্রধান লাইবেরিয়ান মোঃ সেলিম জাহাঙ্গীর, সৌদি প্রবাসি উপজেলার উত্তমপুরের সোহেল রানা ও উপজেলার পিংড়ি গ্রামের আল আমিন। খাদিজার চাচাতো ভাই রিক্সা চালক মোঃ সেলিম খলিফা জানান, খাদিজার প্রতিদিন ঔষধে খরচ হচ্ছে ৪ হাজার দুই শত টাকা করে। যা তাদের পক্ষে চালানো সম্ভব নয় বিধায় হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহতায় কামনা করেছেন। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, খাদিজার চিকিৎসা শেবাচিমেই সম্ভব। বর্তমানে পূর্বের চেয়ে তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। আরো ৩/৪ দিন পরে ক্ষত স্থানে চামড়া লাগিয়ে দেয়া হবে। প্রসঙ্গত বিয়ের ৩ দিনপর হঠাৎ খাদিজা মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে নিরুপায় হয়ে বাবার বাড়ির পরিবারের লোকজন গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে খাদিজাকে ঘরে বেঁধে রাখেন। ছুটে যাওয়ার জন্য দিয়াশলাইট দিয়ে রশি পুড়তে গেলে গায়ে আগুন লেগে দগ্ধ হয় খাদিজা। গত ১৪ দিন এভাবে গ্রাম্য চিকিৎসা সেবা চলার পর রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাবের সংবাদকর্মীদের উদ্যোগে গত ৩০ ডিসেম্বর তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ২ নং বেডে ভর্তি করা হয় এবং দরিদ্র খাদিজার অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না এ মর্মে গত ৩ ও ৪ জানুয়ারি রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাবের সাংবাদিকরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্ব-চিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করলে বিষয়টি জেলা প্রশাসনসহ অনেকেরই নজরে আসে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের স্ব-হৃদয়বান ব্যক্তিরা তাকে আর্থিক সহায়তা করেন।