ঢাকা; পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংশয়ের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের দেয়া বক্তব্যকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ।
তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ওই বক্তব্য দেশে আওয়ামী লীগের হুমকি সংস্কৃতিরই বহিঃপ্রকাশ। দেশে দেশে বর্বর, অগণতান্ত্রিক, জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন স্বৈরাচারী সরকারই গণতন্ত্রকে দুমড়ে-মুচড়ে মানুষের কথা বলা বন্ধ করতেই এ ধরনের হুমকি দেয়। তারা দুর্নীতি করে বলেই মানুষের কথা বলা বন্ধ করার জন্য হুমকি দেয়। আতঙ্ক থেকেই তাদের মধ্যে হুমকি প্রবণতা দেখা দেয়। কোনো সৎ গণতান্ত্রিক সরকার কোনো সমালোচনাতেই হুমকির আশ্রয় নেয় না। অন্তরে সততার দ্বীপশিখা প্রজ্বলিত থাকলে কোনো সমালোচনাতেই বিচলিত হওয়ার কথা নয়। ডালের মধ্যে কালো পদার্থ আছে বলেই ক্রুদ্ধ হয়ে তখন হুমকি দিতে হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য গণতন্ত্রের জন্য বিরাট হুমকি।
গতকাল বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। উল্লেখ্য, সোমবার রাজধানীর মিরপুরে এক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়েও খালেদা জিয়া অনেক কথা বলেছেন। পদ্মা সেতুর কোথায় দুুর্নীতি হয়েছে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন। প্রমাণ করতে না পারলে আপনাকে মামলার সম্মুখীন হতে হবে।’
রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা বলতে চাই, ২০১১ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করলো কেন বিশ্বব্যাংক। পদ্মা সেতুর কাজ পেতে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে দেশপ্রেমিক সার্টিফিকেট দিয়ে মন্ত্রিত্ব কেড়ে নিয়েছিলেন কেন? সচিবসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল কেন? যেহেতু দুর্নীতি দমন কমিশনের মতো আপনাদের একটি সাফসূত্র করার একটি ধোপাখানা আছে, সুতরাং আপনারা তো নিজেদের বড় বড় দুর্নীতিবাজদের ধোপাখানার ওয়াশিং মেশিনে পরিষ্কার করে অব্যাহতি দেন। আর বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দুদক দিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা মামলা দায়ের করে তা টিকিয়ে রাখেন। কারণ, মামলা করার, অভিযোগ দায়ের করার এবং গ্রেপ্তার করার সংস্থাগুলো সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের পকেটে। তিনি বলেন, যে নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছেন, তার বিরুদ্ধে আজ হুমকি ও মামলা সরকারের একমাত্র অস্ত্র। তাকে বারবার আদালতে হাজির করা হচ্ছে সরকারের একমাত্র অস্ত্র। এটার মধ্য দিয়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার তাদের যে বাসনা, সেই বাসনা এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী আহমেদ বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে দুর্নীতি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রমাণের প্রয়োজন আছে বলে বিএনপি মনে করে না। কারণ, এ অভিযোগ তো বিএনপি চেয়ারপারসন করেননি। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো এটা বলছে। খবরের কাগজ, পত্রিকা, গণমাধ্যম এখান থেকে সবকিছু উঠে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের যে তদন্ত চলছে সেখানেও আমরা গণমাধ্যমে পাচ্ছি, আওয়ামী ঘরানার যারা অফিসার আছেন তারা এর সঙ্গে জড়িত। একজন খুব শক্তিশালী লোক আছেন, আমি নাম বলতে চাই না, যিনি এর সঙ্গে জড়িত। আর কত তথ্য প্রমাণ দেয়া যাবে? প্রকাশ্যে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়েছে তাকে বলা হয়েছে শ্রেষ্ঠ দুর্নীতিবাজ। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকারের মনে রাখা দরকার, তাদের হুমকি, অন্যায়-অনাচার কোনো কিছুই হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো মিলিয়ে যাচ্ছে না। প্রতিটি অপকর্মেরই হিসাব রেজিস্ট্রি থাকছে। দেশবাসীকে এগুলোর হিসাব দিতেই হবে। দেশবাসী জানেন, শেয়ারবাজারের হাজার হাজার কোটি টাকা কারা হজম করেছে। ব্যাংক-বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কারা লুট করেছে। বড় বড় প্রকল্পের লুটের টাকা কোথায় পাচার হচ্ছে। জনগণের টাকা জালিয়াতি করে কল্পনাতীত গুণ্ডামির মাধ্যমে আত্মসাৎ করা যাবে না, জনগণের টাকা জনগণকে ফেরত দিতেই হবে একদিন।
৫ই জানুয়ারি কর্মসূচি হবে
৫ই জানুয়ারি কর্মসূচি হবে প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে মানুষ যায়নি। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ভোট বর্জন করেছে। ক্ষমতাসীন দল একতরফা নির্বাচন করেছে। ১৫৩টা আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। যেগুলোতে হয়েছে তারা নিজেরা নিজেরা মিলে করেছেন। এই দিবসে সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল ও নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবে। ৭ই জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ হবে। এসব কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি চলছে। বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। অনুমতি দিচ্ছি, করছি এরকম করে। কখনো ১২ ঘণ্টা আগে, কখনো ৪৮ ঘণ্টা আগে অনুমতি দেয়া হয়। এটাও হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যাতে খুব বড় ধরনের অর্গানাইজ করতে না পারে। কারণ, তারা বিপুল জনগণ দেখলে ভয় পায়। রিজভী বলেন, প্রশাসনকে আশ্বস্ত করতে চাই, এই সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। যত সুশৃঙ্খল রাখা দরকার তা করা হবে। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আশা করি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।
বই উৎসবের নামে প্রতারণা
রিজভী আহমেদ বলেন, কোমলমতি শিশুদের বিনামূল্যে বই বিতরণের নামে প্রতারণা চলছে। শিক্ষামন্ত্রী ঘটা করে বই বিতরণের উৎসব করলেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টাকা ছাড়া শিশুরা বই পাচ্ছে না- এমন অভিযোগ পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের একটি মাত্র বই সরবরাহ করে উৎসব করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে বই উৎসব। উৎসবের নামে কোমলমতি শিশুদের সঙ্গে বই বিতরণে প্রতারণা ও তামাশা বন্ধ করার জন্য আমি বিএনপির পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি। এ সময় নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা চেয়ারম্যান একে আজাদ এবং ১ নম্বর চাকড়পাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুর রহমানকে কয়েকদিন আগে বরখাস্ত করায় নিন্দা জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন ও হারুনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।
৫ই জানুয়ারি কর্মসূচি হবে প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে মানুষ যায়নি। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ভোট বর্জন করেছে। ক্ষমতাসীন দল একতরফা নির্বাচন করেছে। ১৫৩টা আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। যেগুলোতে হয়েছে তারা নিজেরা নিজেরা মিলে করেছেন। এই দিবসে সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল ও নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবে। ৭ই জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ হবে। এসব কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি চলছে। বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। অনুমতি দিচ্ছি, করছি এরকম করে। কখনো ১২ ঘণ্টা আগে, কখনো ৪৮ ঘণ্টা আগে অনুমতি দেয়া হয়। এটাও হচ্ছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যাতে খুব বড় ধরনের অর্গানাইজ করতে না পারে। কারণ, তারা বিপুল জনগণ দেখলে ভয় পায়। রিজভী বলেন, প্রশাসনকে আশ্বস্ত করতে চাই, এই সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। যত সুশৃঙ্খল রাখা দরকার তা করা হবে। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আশা করি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।
বই উৎসবের নামে প্রতারণা
রিজভী আহমেদ বলেন, কোমলমতি শিশুদের বিনামূল্যে বই বিতরণের নামে প্রতারণা চলছে। শিক্ষামন্ত্রী ঘটা করে বই বিতরণের উৎসব করলেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টাকা ছাড়া শিশুরা বই পাচ্ছে না- এমন অভিযোগ পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের একটি মাত্র বই সরবরাহ করে উৎসব করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে বই উৎসব। উৎসবের নামে কোমলমতি শিশুদের সঙ্গে বই বিতরণে প্রতারণা ও তামাশা বন্ধ করার জন্য আমি বিএনপির পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি। এ সময় নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা চেয়ারম্যান একে আজাদ এবং ১ নম্বর চাকড়পাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুর রহমানকে কয়েকদিন আগে বরখাস্ত করায় নিন্দা জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন ও হারুনুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।