ডেস্ক: যুদ্ধাপরাধের মামলায় গাইবান্ধার ছয় আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। অগ্নিসংযোগ, দেশত্যাগে বাধ্য করা, হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে বলে বুধবার তদন্ত সংস্থার এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
আসামিরা হলেন- গাইবান্ধা সদরের মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল (৮৬), তার ছেলে মো. জাছিজার রহমান ওরফে খোকা (৬৪), মো. আব্দুল ওয়াহেদ মণ্ডল (৬২), মো. মোন্তাজ আলী ব্যাপারী ওরফে মমতাজ (৬৮), মো. আজগর হোসেন খান (৬৬), মো. রনজু মিয়া (৫৯)। আসামিদের মধ্যে রনজু মিয়া বাদে বাকি পাঁচ আসামি পলাতক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, বুধবারই তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনে জমা দেওয়া হবে।
ধানমণ্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সানাউল হক বলেন, “এটি তদন্ত সংস্থার ৪৪তম এবং বছরের শেষ তদন্ত প্রতিবেদন। গত বছরের ১২ অক্টোবর এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছে।”
তিনি জানান, তদন্তের সময় ৪০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনটি জব্দ তালিকার সাক্ষী রয়েছে। সব মিলিয়ে মোট সাক্ষী ৪৩ জন।
“আসামিদের সবাই জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক,” বলেন তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক।
জব্বার মণ্ডল ১৯৭১ সালের আগে থেকেই জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ১৯৭২ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেও তার বিচার হয়নি।
সানাউল হক বলেন, বাবার মতো জাছিজার রহমানও জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনিও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ১৯৭২ সালে। কিন্তু তারও বিচার হয়নি। পঁচাত্তরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে জাছিজার পুলিশে যোগ দেন, ২০১৪ সালে তিনি অবসর নেন।
মামলার পাঁচ নম্বর আসামি আজগর হোসেনও একাত্তরের আগে থেকেই জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭৪ সালে কৃষি বিভাগে চাকরিতে যোগ দিয়ে ২০১২ সালে অবসর নেন তিনি।
তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, গতবছরের ২৫ মে আসামিদের গ্রেপ্তারের আবেদন করা হয়। ট্রাইব্যুনাল ২৬ মে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গাইবান্ধার পুলিশ রনজু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। ২৯ মে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আগামী ২৮ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমার দিন রয়েছে।