ক্ষুব্ধ পুতিন: রাষ্ট্রদূত হত্যাকাণ্ডের জবাব হবে ভয়াবহ

Slider সারাবিশ্ব

45425_putin-1

 

ঢাকা; তুরস্কে রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কারলভকে নৃশংসভাবে হত্যায় ক্ষুব্ধ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সারাবিশ্বে রাশিয়ার দূতাবাসগুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি জোর দিয়ে জানতে চেয়েছেন হত্যাকারীর নেপথ্যে নির্দেশদাতা কে ছিল।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডে রাশিয়ার জবাব হবে ভয়াবহ। পুতিন বলেছেন, রাশিয়া ও তুরস্কের সম্পর্ককে নস্যাৎ করে দিতে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। সিরিয়া সঙ্কট সমাধানে ইরান ও তুরস্ককে সঙ্গে নিয়ে মস্কো যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে বানচাল করার উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, এরই মধ্যে রাশিয়ার তদন্তকারীরা তদন্ত শুরু করেছেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়েছে, ক্রেমলিনে এক বিশেষ বৈঠকে বক্তব্য রাখছিলেন পুতিন। সেখান থেকে তার মন্তব্য প্রকাশ করা হয় টেলিভিশনে। এতে তিনি নিহত রাষ্ট্রদূত কারলভের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় চিত্র প্রদর্শনীতে একটি আর্ট গ্যালারিতে উপস্থিত হয়েছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কারলভ। সেখানে তাকে পিছন থেকে গুলি করা হয়। ক্রেমলিন থেকে যখন পুতিনের বক্তব্য প্রচার করা হয় টেলিভিশনে তখন তার মুখমণ্ডলে মাংসপেশিগুলো শক্ত হয়ে ওঠে। তাতে ফুটে ওঠে তার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে আসা ও সিরিয়া সঙ্কটের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথকে নষ্ট করতে কোনো প্ররোচণা ছাড়াই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। রাশিয়া, তুরস্ক, ইরান ও অন্যরা সিরিয়া সঙ্কট সমাধানের ওই উদ্যোগ নিয়েছিল। পুতিন বলেন, এ সময়ে এমন হত্যাকাণ্ড একটিই জবাব হতে পারে। তাহলো সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই জোরালো করা। শত্রুরা তা সহসাই টের পাবে। ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, নিহত রাষ্ট্রদূতকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ভালভাবে জানেন। এরই মধ্যে এ নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন পুতিন। এতে রাশিয়ান তদন্তকারীদের অবিলম্বে আঙ্কারা যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে তুরস্ক। একই সঙ্গে তারা তদন্তে সহায়তা করার কথাও বলেছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা এসভিআরের প্রধান সের্গেই নারিশকিন ও আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি’র প্রধান আলেকজান্দার বর্টনিকোভকে এরই মধ্যে এ বিষয়ে পুতিন নির্দেশ দিয়েছেন। তাদেরকে তিনি বলেছেন, আমাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে এই ঘাতকের নেপথ্যে কে রয়েছে। অর্থাৎ খুঁজে বের করতে হবে কার কথায় এই ঘাতক রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে হত্যা করেছে। এর বাইরে তুরস্কে রাশিয়ার যেসব কূটনৈতিক মিশন আছে সেখানে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এসব মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার গ্যারান্টি চেয়েছেন তিনি তুরস্কের কাছে। ওদিকে আজ মস্কোতে সিরিয়া সঙ্কট নিয়ে আলোচনায় বসার কথা রাশিয়া, ইরান ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের। কিন্তু রাষ্ট্রদূতকে হত্যার ফলে এ বৈঠক হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকের। কিন্তু এমন সন্দেহের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার সিনিয়র একজন পার্লামেন্টারিয়ান লিওনিদ স্লুটস্কাই। তাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স বলেছেন, রাষ্ট্রদূত নিহত হলেও এ আলোচনা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *