এইচআরডব্লিউয়ের এশিয়ার পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী অবস্থান ও নজরদারি করছে, সেখানে এক মাসে তিন শতাধিক বাড়িঘর রোহিঙ্গারা জ্বালিয়ে দিয়েছে—এটা বিশ্বাস করা কঠিন।’ তিনি বলেন, ‘দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের ছবি কৃত্রিম উপগ্রহের এই ছবিতে দেখা গেছে। কাজেই তারা ক্রমাগত অস্বীকার করলেও এর বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে।’
এই অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে মিয়ানমার সরকারের প্রধান মুখপাত্র জ এইচতে বিবিসিকে বলেন, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে ওই ঘটনার জন্য তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।
মিয়ানমার সরকারের নিয়োগ করা একটি দল গত কয়েক দিনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পরিদর্শন করেছে। আগামী জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে দলটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাখাইন রাজ্যের বর্তমান সংকট ও রোহিঙ্গাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার বিষয়ে এটা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তৃতীয় প্রতিবেদন। এর আগে ওই গ্রামগুলো সেনারা জ্বালিয়ে দেয়—এমন অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার সরকার জানায়, আন্তর্জাতিক সহানুভূতি পেতে রোহিঙ্গারা নিজেরাই তাদের বাড়িঘরে আগুন দেয়।
গত ৯ অক্টোবর রাখাইন রাজ্যে সীমান্তের তিনটি চেকপোস্টে অস্ত্রধারীদের হামলায় দেশটির নয়জন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর রোহিঙ্গাদের দমনে সেনাবাহিনীর অভিযান শুরু হয়। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ ওঠে। মিয়ানমার এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও তারা এসব এলাকায় স্বাধীন তদন্তকারী ও বিদেশি সাংবাদিকদের ঢুকতে দিচ্ছে না।
রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনায় মিয়ানমারের অঘোষিত প্রধান শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী অং সান সু চিকে ক্রমবর্ধমানহারে আন্তর্জাতিক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি গতে হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ওপর এই নির্যাতনকে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে বর্ণনা করেছেন।
জাতিসংঘের দেওয়া সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, ৯ অক্টোবরের পর থেকে ২৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে