পাবনা মেডিকেলের নিখোঁজ ২ শিক্ষার্থীর বাড়ি রংপুরে

Slider গ্রাম বাংলা

nikh

রংপুর ডেস্কঃ পাবনা মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত রংপুরের দুই শিক্ষার্থী আট দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তারা হলেন- রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুরুজ্জামানের ছেলে জাকির হোসেন বিপ্লব ও রংপুর নগরীর শালবন মিস্ত্রিপাড়ার মৃত্তিকা সম্পদ অফিসের হিসাবরক্ষক নূর আলম সরকারের ছেলে তানভীর আহম্মেদ তন্ময়।

নিখোঁজের ঘটনায় উৎকণ্ঠায় দিনযাপন করছেন দুই পরিবারের স্বজনরা। এ বিষয়ে আইনশৃংখলা বাহিনী দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই দুই ছাত্রের পরিবার। স্বজনরা বলছেন, দুই মাস আগেও দুই বন্ধু তাবলিগ জামাতের কথা বলে বেশ কিছুদিন বাইরে থাকে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্ভবত তারা দুজনই বগুড়ায় একত্রিত হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছে। মোবাইলফোন বন্ধ থাকায় তাদের বর্তমান অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

তন্ময়ের বাবা নূর আলম সরকার বলেন, ‘তন্ময় পাবনা মেডিকেল কলেজের ছাত্রবাসে থাকতো। ৩০ নভেম্বর বিকালে হোস্টেল থেকে বেরিয়ে যায়। এর পর থেকেই তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘তন্ময়ের সহপঠীরা বিষয়টি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানালে ওই রাতেই কলেজের পক্ষ থেকে পাবনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।’

নূর আলম আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি পাবনা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে ছেলেকে খুঁজে বের করার আকুতি জানিয়েছিলেন। পরে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির সঙ্গেও দেখা করেন।

ওই পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে জানান, তন্ময় সর্বশেষ বগুড়ায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে এ ধরনের তথ্য তারা পেয়েছেন। এর পর থেকেই তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

নূর আলম বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়ার দিন তন্ময় আমার কাছে কিছু টাকা চেয়েছিল। তাকে বিকাশের মাধ্যমে কিছু টাকা পাঠিয়েছি। তন্ময় নিখোঁজ হওয়ার আট দিন পেরিয়ে গেছে। এ বিষয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর যতটুকু তৎপর হওয়া উচিত তা হচ্ছে না।’
নিখোঁজ জাকির হোসেন বিপ্লবের বাবা সুরুজ্জামান জানান, ‘২৪ নভেম্বর বাড়ি এসেছিল জাকির। পরে ১ ডিসেম্বর পাবনায় ফিরে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। এর পর মোবাইলফোনে ওর সঙ্গে কথা হলে জানায়, লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে পাবনা যাচ্ছে। সর্বশেষ গাইবান্ধার বোনার পাড়া রেল স্টেশনে ট্রেন পৌঁছালে কথা হয় জাকিরের সঙ্গে। এরপর থেকেই ওর মোবাইলফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।’

অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ছেলের সন্ধান না পেয়ে ৪ ডিসেম্বর কাউনিয়া থানায় জিডি করেছেন বলে জানান নিখোঁজ জাকিরের বাবা। তিনি বলেন, ‘জাকির ও তন্ময় দুজনই পাবনা মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষে পড়ত। ওরা দুজনই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তন্ময় রাজনীতি করত না। তবে জাকির পাবনা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল।’

সুরুজ্জামান আরও বলেন, ‘তন্ময় তাবলিগ জামাত করতো। দুই মাস আগে তন্ময় জাকিরকে তাবলিগ জামায়াতে নিয়ে যায়। জাকিরকে আবারও তাবলিগে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করেছে।’

তন্ময়ই তার ছেলেকে কোথাও নিয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন তিনি।
জাকিরকে খুঁজে বের করতে আইনশৃংলা বাহিনীকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে না বলে অভিযোগ করেন বলেন সুরুজ্জামান।

কাউনিয়া থানার ওসি আবদুল কাদের জিলানী বলেন, ‘বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। দেশের বিভিন্ন স্থানে ছবিসহ জরুরি বার্তা পাঠানো হয়েছে। আশা করি, শিগগিরই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *