ঢাকা; কিছুক্ষণের জন্য তাঁকে ‘সালমান’ই লাগল। রুপালি পর্দার সেই সালমান—সেটা খানই হোন কিংবা শাহ। একদম বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচটা লুফে ফরহাদ রেজা দেখলেন, পা চলে যাচ্ছে সীমানার বাইরে। বল ছুড়ে দিলেন হাওয়ায়। সীমানার ওপারে বেরিয়ে এসে নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও ঢুকলেন মাঠে। পড়তি বলটা লুফে নিলেন আবার!
ক্রিকেটে এমন ক্যাচ এখন আর নতুন নয়। টি-টোয়েন্টিতে তো আরও নয়। তবু এমন ক্যাচ ধরার জন্য ‘হিরোগিরি’ লাগে তো। জার্সির ওপরে চাপানো সোয়েটারের পেছনে লেখা ‘সালমান’ নামটাকে কিছুক্ষণের জন্য বেশ সার্থক করে তুললেন ফরহাদ। তাঁর সেই ক্যাচটা শেষ পর্যন্ত ম্যাচে কত বড় ভূমিকা রাখবে, তা বলার উপায় নেই।
তবে আন্দ্রে রাসেলকে ওই ক্যাচে মাত্র ৮ রানে ফেরাতে পেরেছে বলে ঢাকা ডায়নামাইটসের রানের স্রোতেও বাঁধ দিতে পেরেছে রাজশাহী কিংস। সম্ভাব্য স্কোরের চেয়ে অন্তত গোটা কুড়ি রান তো কম হলো। তবু ঢাকার ৯ উইকেটে তোলা ১৫৯ যথেষ্ট ভালো স্কোর। টি-টোয়েন্টির মাঝপথে ম্যাচ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিনতম এক কাজ। ফাইনালটা কে জিতবে, তা বলা আসলেই কঠিন। তবে এবারের বিপিএলের যে ছবি, তাতে ১৬০-এর লক্ষ্য ছোঁয়া রাজশাহীর জন্য চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। যদি–না ডিউ ফ্যাক্টর বেশি ভোগায় ঢাকাকে।
এ মাঠেই চট্টগ্রাম ভাইকিংসের দেওয়া ১৬৪ রানের লক্ষ্য ৭ উইকেট আর ২ বল হাতে রেখে জিতেছিল বরিশাল বুলস। এবারের বিপিএলে অবশ্য আরও দুটি বড় স্কোর তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছে। দুটিই চট্টগ্রামে, একই দিনে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের করা ১৮৩ বেশ সহজেই পেরিয়ে গিয়েছিল চিটাগং কিংস। তবে রাজশাহীর জন্য প্রেরণা দিনের প্রথম ম্যাচটি। সেবার যে ঢাকার দেওয়া ১৮৩ রানের লক্ষ্য ১ বল আর ৩ উইকেট হাতে রেখে জিতেছিল তারা।
আজ এমনই কিছু একটা করে দেখাতে হবে তাদের। নয়তো চার বিপিএলে তৃতীয়বারের মতো রাজধানী শহরেই থেকে যাবে ট্রফিটা। নাকি হবে রাজশাহীর রাজ?
ব্যাট হাতে ঢাকার একক কোনো নায়ক নেই। লুইস ৩১ বলে ৪৫ করলেন। কুমার সাঙ্গাকারা ৩৩ বলে ৩৬। বিশেষ করে সাঙ্গার ব্যাটেই শেষ চার ওভারে ৪৪ রান তুলতে পারল তারা। না হলে ফরহাদ রেজার সেই দুর্দান্ত ক্যাচে রানের গতি শ্লথ হয়ে গিয়েছিল। আর রাসেলের মতো ঝড় তোলা ব্যাটসম্যানকে হারানো তো ছিল আরও বড় ধাক্কা। ফরহাদ ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে রাজশাহীর সফল বোলারও। সাত বোলারের ছয়জনই উইকেট পেয়েছেন। ফরহাদ বাদে বাকি ছয়জনই একটি করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ডায়নামাইটস : ২০ ওভারে ১৫৯/৯ (মেহেদী মারুফ ৮, লুইস ৪৫, নাসির ৫, মোসাদ্দেক ৫, সাঙ্গাকারা ৩৬, ব্রাভো ১৩, রাসেল ৮, সাকিব ১২, আলাউদ্দিন ১, সানজামুল ১২*, জাইদ ০*; উইলিয়ামস ১/৩৬, ফরহাদ ৩/২৮, মেহেদী মিরাজ ১/২২, আফিফ ১/২৩, স্যামি ১/২২, নাজমুল ০/১৩, প্যাটেল ১/৮)।
* এক ইনিংস পর্যন্ত