ঝিনাইদহে সেই মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের সংবাদ প্রকাশের পর ১ জন গ্রেফতার !
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে অসিত কুমার সাহা (৬৫) নামে এক মুক্তিযোদ্ধা ও তার ছেলে কাত্তিক সাহাকে (২৮) মারধরের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে পুলিশের অভিযানে রাজা সাহা নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়।
হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার আহত মুক্তিযোদ্ধা অসিত কুমার সাহা বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলায় হামলাকারী দুই ভাই বেথুলী গ্রামের বখাটে রাজা সাহা ও দিপংকর সাহাকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার এসআই লিটন কুমার বিশ্বাস জানান, মুক্তিযোদ্ধা অসিত সাহা ও তার ছেলের ওপর হামলার ঘটনায় বেথুলী গ্রামের দিলীপ সাহার দুই ছেলে দিপংকর সাহা ও রাজা সাহার নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং ১৫। পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই আসামির মধ্যে রাজা সাহাকে শুক্রবার সকালে গ্রেফতার করেছে। অপর আসামি পালিয়ে গেছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকালের দিকে মুক্তিযোদ্ধা অসিত কুমার সাহা বেথুলী পূজা মন্ডুপের কাছে ধান শুকাতে দেন। দুপুরের দিকে একই এলাকার দিলীপ সাহার দুই ছেলে দিপংকর ও রাজা তাদের ধান ফেলে দেয়। এর প্রতিবাদ করলে ক্ষীপ্ত হয়ে দিপংকর ও রাজা মুক্তিযোদ্ধা অসিত কুমার সাহা ও তার ছেলে কাত্তিক সাহাকে কিল, ঘুষি ও বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। ওই উচ্ছৃঙ্খল যুবকদের হামলায় মুক্তিযোদ্ধার একটি চোখ মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হলে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, মুক্তিযোদ্ধাকে মারপিটের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। অপরজন পালিয়েছে। তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ঝিনাইদহে শিশুকে ধর্ষণের মামলা অত:পর আটক ১ !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ শহরের খাজুরা নদীপাড়ায় ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী ধর্ষনের ঘটনায় মামলায় এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকালে পুলিশের অভিযানে তিন জনের মধ্যে ধর্ষক রাব্বি নামের একজন কে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ শহরের খাজুরা নদীপাড়ায় ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরী ধর্ষনের শিকার হয়েছে। তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: স্বপন কুমার কুন্ডু জানান, বুধবার মধ্যরাতে মেয়েটিকে তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। একটু সুস্থ হলে তাকে ডাক্তারী পরীক্ষা করা হবে।
এনজিও শোভার মানবাধিকার কর্মী পাপিয়া সুলতানা ধর্ষিতা কিশোরী সুমির উদ্বৃতি দিয়ে জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাতে মেয়েটি পাশের বাড়িতে এক হুজুরের কাছে পানি পাড়া আনতে যাচ্ছিলো।
এ সময় খাজুরা গ্রামের বখাটে যুবক শুকুর বিশ্বাসের ছেলে দোলন, মধু মিয়ার ছেলে রাব্বি ও আমিনুল ইসলামের ছেলে মাসুম তাকে জোর করে একটি ইজিবাইকে তুলে নিয়ে তিনজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষন করে।
ধর্ষন করার পর তিন লম্পট হতদরিদ্র পরিবারটিকে হাসপাতালে ভর্তি, থানায় মামলা এমনটি লোক জানাজানি না করতে হুমকী দেয়, করলে খুন কওে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন সুমি। এতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে পরিবারটি। মানবাধিকার কর্মী পাপিয়া সুলতানা আরো জানান, বুধবার বিকাল নাগাদ মেয়েটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ওই দিন মধ্যরাতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে ধর্ষকরা প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি সামাজিক ভাবে মিটিয়ে ফেলার জন্য ধর্ষিতার পরিবারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেয়ের ভাই জাহাঙ্গিও আলমএবং মা জাহানারা বেগম সাংবাদিকদের নিকটে এ অভিযোগ করেন।
সুুমির পরিবার আরো বলেন, আমরা গরীব বলে আমরা কি বিচার পাব না ? বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার এসআই আজিজুর রহমান জানান, থানায় এখনো ভিকটিমের পরিবার কোন অভিযোগ করেনি।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্রনাথ সরকার সাংবাদিককে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির বড় ভাই বাদী হয়ে ধর্ষক দোলন সহ রাব্বি, মাছুম নামে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় পুলিশ রাব্বি কে আটক করতে সক্ষম হয়। প্রথম আসামী দোলন এখন গ্রামছাড়া আছে তাকে আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এবার পৌর শহরে ডাকাতি !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর শহরে এবার একাধিক বড় ধরণের চুরির ঘটনার পর এবার ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতরা ধারালো অস্ত্রের মুখে বাসার সকলকে জিম্মি করে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গেছে।
কোটচাঁদপুর পৌর শহরের ব্রীজঘাট হালদারপাড়া’র বাসিন্দা মৃত হাসান চৌধুরী ওরফে পচা মিয়ার ছেলে বোরহানী হাসান মানিক চৌধুরীর বাসায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ভূক্ত ভোগী মানিক চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত আনুমানিক তিনটার দিকে কালো পোশাকে ৭/৮ জন কালো মুখোশধারী ডাকাতদল তার বাসায় হানা দেয়।
ডাকাতরা ঘরের গ্রীল ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত সকলকে জাগিয়ে তোলে। তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে বাসার সকলকে জিম্মি করে নগদ ৩৫ হাজার টাকা ও ২টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়। স্বর্ণের গহনার খোঁজে ডাকাতরা আধা ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে আলমারী শোকেজ ও বিছানা উলট পালট ও তচনছ করে নিরবিঘেœ চলে যায়।
কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহমেদ কবির এ প্রতিবেদককে বলেন, এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত (দুপুর ১২টা) কেউ অভিযোগ দাখিল করেনি। তবে আমরা খবর পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ভূক্তভোগীরা কাউকে চিনতে না পারায় আমরা অপরাধীদের সনাক্ত করার চেষ্টা করছি।
উল্লেখ্য পৌরশহরে বড় ধরণের চুরি ডাকাতির মাত্রা বেড়ে গেছে। গত ২৭ আগষ্ট দিনের বেলায় বিশেষ কায়দায় ছাদের চিলে কোঠার দরজা খুলে বেনেপাড়ার সুরাইয়া নামের এক শিক্ষিকার বাসা চুরি হয়। এ সময় বাসায় কেউ না থাকায় চোরেরা ৮ভরি স্বর্ণলোংকার চুরি করে নিরবিঘেœ পালিয়ে যায়।
এর কিছু দিন আগে শহরের সলেমানপুরের মোহাম্মদ আলী ড্রাইভারের বাসার গ্রীল ও ঘরের তালা ভেঙ্গে চোরেরা নগদ টাকা, স্বর্ণলোংকারসহ প্রায় ৫ লক্ষাধীক টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তুু এ সকল ঘটনার জড়িতদের পুলিশ আজও সনাক্ত করতে পারেনি। যে কারণে আবারো শহরে ডাকাতি’র মত ঘটনা ঘটায় শহরবাসীর মনে ভীতির সৃষ্টি করেছে।
মুুল ঘটনা এবার ফাঁস শাহনুরের মেয়ে গার্মেন্ট কর্মী !
ঝিনাইদহে সেই দুপা হারানো শাহনুরের মেয়ে গার্মেন্ট কর্মী মর্মে পুলিশের প্রতিবেদন !
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
বখাটেদের হাত থেকে রক্ষা করতে গিয়ে দুই পা হারানো কৃষক শাহানুর বিশ্বাসের বড় মেয়েকে গার্মেন্ট কর্মী উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে বলে দায়িত্বশীল স্ূেত্র জানা গেছে।
তবে পুলিশের এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেছেন বাবা-মেয়ে। শাহানুরের মেয়ে শারমীন আক্তার প্রতিবেদন শুধু প্রত্যাখানই করেননি বরং উল্টো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন পুলিশের উপর। শারমিন আক্তার ২০১২ সালে যশোর সরকারি মহিলা কলেজে বাংলা বিভাগে অনার্সে ভর্তি হয়। তার রোল নং ১১৩০। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৩ সাল থেকে কলেজে আসা যাওয়ার পথে প্রায় উত্ত্যাক্ত করত মাহাবুব মেম্বরের ছেলে আজম ও তার সঙ্গীরা।
উপায় না পেয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেন শাহানুর বিশ্বাস। স্বামী বিদেশে থাকায় বাবার বাড়ি থেকেই কলেজে আসা যাওয়া করতেন শারমীন আক্তার। বিয়ের পরও বখাটেরা তাকে উত্ত্যাক্ত করতে থাকে। পরে শারমিন আক্তার স্বামীর বাড়ি চলে যায় তাদের ভয়ে। শারমীনের ছোট বোন শাহানাজ আক্তার স্থানীয় একটি স্কুলের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী।
এ ঘটনার প্রতিকার করেন শাহানুর বিশ্বাস। এতে ক্ষিপ্ত হন কামাল মেম্বর ও মাহাবুবের (সাবেক মেম্বর) লোকজন। গত ১৬ অক্টোবর সকালে কাজের সন্ধানে বাসা থেকে বের হন শাহানুর বিশ্বাস। এ সময় মাহাবুব, কামাল (বর্তমান মেম্বর), আজম, হাসান, মোতালেব, বিল্লাল, জাহিদ, ইমদাদুল, দুখু, কালাম লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দেয় শাহানুর বিশ্বাসের।
এক পর্যায়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহানুর বিশ্বাসকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তার দুই পা কেটে ফেলেন। বর্তমান তিনি পঙ্গু হাসপাতালের বি ওয়ার্ডের ৬১ নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে, পুলিশের সদর দপ্তরে পাঠানো ঝিনাইদহ পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাহানুরের বড় মেয়ে ঢাকার একটি গার্মেন্টে কাজ করেন। ছোট মেয়ে স্থানীয় একটি স্কুলে লেখাপড়া করে।
এখানে উল্লেখ্য, শাহানুর বিশ্বাসের বড় মেয়ে শারমীন আক্তারের দুবার বিবাহ হয়। প্রথম স্বামীর থেকে দুলাখ টাকা নিয়ে তালাক দিয়ে প্রবাসীকে বিবাহ করে শারমীন আক্তার।