রংপুর ডেস্কঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের উচ্ছেদ এলাকায় বসতিস্থাপনকারী সাঁওতালদের রোপন করা ১০০ একর জমির পাকা রোপা আমন ধান কাটার সিন্ধান্ত হয়নি। ফলে অনেক জমির ধান ঝরে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ, পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম (বিপিএম) ও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল আউয়াল সাঁওতাল পল্লীর লোকজনের সংগে কথা বলছেন। কিন্তু সাঁওতালরা ধান কাটার বিষয়ে সিন্ধান্ত পরে জানিয়ে দিবেন বলে জানিয়েছেন।
এর আগে, সোমবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আব্দুল হান্নান চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ নিয়ে সাঁওতাল পল্লীর (মাদারপুর চার্চ) এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে সাঁওতালদের জমি থেকে ধান কেটে আনা ও যেসব জমিতে পানি দেয়ার দরকার সেসব জমিতে পানি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এসময় উপস্থিত সাঁওতাল নেতৃবৃন্দ জানান, ১০০ একর জমিতে সম্মিলিতভাবে ধান চাষ করা হয়েছে। তাই কিভাবে ধান তারা কাটবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার জানান, মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ধান কাটার নির্দেশে প্রশাসন ও রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ সাঁওতালদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু সাঁওতালদের পক্ষ থেকে ধান কাটার সিন্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তারা ধান কাটার সিন্ধান্ত নিয়ে প্রশাসনকে জানাবেন।
রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল আউয়াল জানান, খামারের প্রায় ১০০ একর জমিতে সাঁওতালরা ধান চাষ করেছে। সুশৃংখলভাবে ধান কাটতে সাঁওতালদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে পরে সিন্ধান্ত জানানোর কথা রয়েছে। সিন্ধান্ত হলে ধান কাটা শুরু হবে।
তিনি আরও জানান, সাঁওতালরা যে যেভাবে জমিতে আমন ধান রোপন করেছিলো ঠিক সেভাবেই তারা ধান কাটবে। আর যদি সাঁওতালরা ধান না কাটতে চায় তাহলে মিলের শ্রমিক দিয়ে ধান কেটে সাঁওতালদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তারা ধান নিতে না চাইলে ধান রেখে আদালতে জানানো হবে।
তবে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম আদিবাসী ভূমি উদ্ধার কমিটির সহ-সভাপতি ফিলিমন বাসকে জানান, এসব জমিতে ব্যক্তিগতভাবে কোন সাঁওতাল ধান চাষ করে নাই। কমিটির নামে সংঘবদ্ধভাবে রোপ আমন ধান চাষ করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ধান কাটা হবে। তবে ধান কাটার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। এছাড়া এখনও অনেক জমির ধান পাকতে বাকি আছে। ধান কাটার বিষয়ে সিন্ধান্ত নেওয়া হলে মিল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে জানানো হবে।
তবে সাধারণ সাঁওতালদের সাথে কথা বললে তারা জানান, তাদের আবাদি জমির চারপাশে রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ কাটা তারের বেড়া দিয়ে দিয়েছে। যা তাদের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘিœত করছে। সুতরাং তারা চান ধান কাটলে হলে আগে চিনিকল কর্তৃপক্ষ কাটা তারের বেড়া অপসারণ করুক।