প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের সঙ্গে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদবিরোধী এবং উন্নয়নবিষয়ক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান উদ্বোধন এবং আরভি মিন সন্ধানী নামের একটি জরিপ জাহাজের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিপূর্ণ দেশ। কাজেই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করার জন্য সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে আমি আহ্বান জানাব।’ তিনি আরও বলেন, ইমাম, শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবী এবং প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যাঁরা আছেন—সবাইকে সম্মিলিতভাবে এই সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে বোঝাতে হবে-সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের পথ শান্তির পথ নয়, এই পথ কখনো মানুষের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের উন্নতি হয়। বাংলাদেশ এগিয়ে চলে। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। কারণ, আমরা এ দেশকে ভালোবাসি। দেশের মানুষকে ভালোবাসি। দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার ব্রত নিয়েই আমরা রাজনীতি করি।’
ইউএনবির খবরে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর ৪৫ বছর চলে গেছে। তবে এখনো আমরা বলতে পারি না যে আমাদের সাক্ষরতার হার শতভাগ অর্জন হয়েছে। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক।’
আজ দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। আজ সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের স্মারক বক্তৃতা করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনা না ঘটলে আজ শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন সম্ভব হতো। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনককে হত্যার পর দেশে হত্যা, ক্যু ও অবৈধ ক্ষমতা দখল এবং সামরিক শাসন শুরু হয়। দেশের উন্নয়নে এরা কখনোই কিছু করেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, সামরিক একনায়কেরা দেশের চিন্তা না করে কেবল নিজেদের আর্থিক উন্নয়ন নিয়ে ভেবেছেন।
রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরুর কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অন্যান্য বিভাগে পর্যায়ক্রমে এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সামরিক শাসকেরা কখনোই দেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে দিতে চায়নি। জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া উভয়েই যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের মন্ত্রী ও সাংসদ বানিয়েছেন। তাদের জাতীয় পতাকা দিয়ে দেশ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ভূলুণ্ঠিত করেছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিদের স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।