নিয়ন্ত্রণ রেখায় গুলি বিনিময় পালাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ

Slider জাতীয় সারাদেশ

file-1

 

গ্রাম বাংলা ডেস্ক; পাকিস্তান দাবি করেছে, কাশ্মিরে ভারতের গোলা নিক্ষেপের ফলে হাজার হাজার মানুষ তাদের গ্রাম থেকে পালাচ্ছে। পাকিস্তানের একজন রাজনীতিক এমন দাবি করেছেন। বার্তা সংস্থা এপি ও রয়টার্স’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। কাশ্মিরের লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য ওয়াকার নূর বলেছেন, কাশ্মিরে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে ভিমবার সেক্টরের কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। তাদেরকে থাকার জায়গা দেয়ার জন্য চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। এসব মানুষের অনেকে এখন খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। কেউবা আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ওয়াকার নূর বলেছেন, বাড়িছাড়া এসব মানুষকে হয়তো স্কুলে আশ্রয় দেয়া হবে। তবে যদি তাদের সংখ্যা বাড়তেই থাকে তাহলে সরকারকে ‘তাঁবু গ্রাম’ প্রতিষ্ঠা করতে হতে পারে। উল্লেখ্য, পাকিস্তান দাবি করেছে সোমবার ভারতীয় সেনারা ভিমবার এলাকায় গুলি করেছে। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। এতে সেখানে পাকিস্তানের ৭ সেনা সদস্য নিহত হন। ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রামগুলো থেকে অধিবাসীদের সরিয়ে নেয়া হয়। উল্লেখ্য, এশিয়ায় পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মির ইস্যুতে দীর্ঘ সময় ধরে উত্তেজনা বিরাজমান। দু’দেশই পুরো কাশ্মিরকে তাদের বলে দাবি করে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এ যাবত তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। তার মধ্যে দুটি যুদ্ধই হয়েছে এই কাশ্মিরকে কেন্দ্র করে। সাম্প্রতিক সময়ে এ নিয়ে উত্তেজনা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। যুদ্ধংদেহী মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে দু’দেশের মধ্যেই। সোমবার যেসব মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে গেছেন তার মধ্যে বানিয়া গ্রামের একজন কৃষক ওয়াকালাত হোসেন অন্যতম। তিনি বলেছেন, প্রচ- গোলা নিক্ষেপ ও গুলি বিনিময়ের কারণে গ্রামবাসী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তারা সব সম্পদ, গরু-ছাগল ফেলে পালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, অন্য হাজারো মানুষের মতো এখন আমি স্ত্রী ও ৫ সন্তানকে নিয়ে অবস্থান করছি খোলা আকাশের নিচে। নেই কোনো খাদ্য ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা। খেরুওয়াল গ্রামের একজন বাসিন্দা মোহাম্মদ খাদিম। তিনিও একজন কৃষক। তিনি বলেছেন, বাড়িতে অবস্থান করে তিনি, তার স্ত্রী ও ৭ সন্তান নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। এরপর বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী রাজা ফারুক হায়দার সাংবাদিকদের বলেছেন, নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতের উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে থাকলে সরকার ৫ লাখ পর্যন্ত মানুষকে আশ্রয় দিতে পারবে। এখন পর্যন্ত সরকার ৫০ হাজার গ্রামবাসীর থাকার ব্যবস্থা করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০৩ সালের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। তার প্রতিশোধ নিচ্ছে তারা। ভারতীয় এক সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, ভারতীয় সেনারা মঙ্গলবার প্রায় ৪ ঘন্টা গুলি ছুড়েছে। এ সময় গুলি বিনিময়কালে ভারতীয় পক্ষে কেউ হতাহত হয় নি। তা সত্ত্বেও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র বিষয়ক এক শীর্ষ কর্মকর্তা সারতাজ আজিজ মঙ্গলবার বলেছেন, ভারতে অনুষ্ঠেয় ‘হার্ট অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন তিনি। তার ধারণা, এ সফরের মধ্য দিয়ে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যকার উত্তেজনা নিরসন হবে। সেপ্টেম্বরে কাশ্মিরের উরি এলাকায় ভারতীয় সেনাদের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন ভারতীয় ১৯ সেনা সদস্য। এ জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছে। ওই ঘটনার পর সারতাজ আজিজের এই সফরই হবে পাকিস্তানের সিনিয়র কোনো কর্মকর্তার ভারতে পা রাখা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *