ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় সমাবেশগুলো হয়েছে নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস ও শিকাগোতে। সমাবেশের সংগঠকেরা বলেছিলেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কয়েক দিন ধরে চলা এ বিক্ষোভে তাঁরা সপ্তাহান্তে আরও গতি আনতে চান।
শনিবারের মিছিলকারীদের বহন করা প্ল্যাকার্ডগুলোতেও যথারীতি লেখা ছিল ‘তিনি আমার প্রেসিডেন্ট নন’, ‘ট্রাম্পের ঘৃণাকেই ভালোবাসি!’, ‘তিনি যোগ্য নন’-এ সব স্লোগান। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাঁদের নাগরিক ও মানবাধিকার হুমকির মুখে পড়েছে।
শনিবার অরেগন অঙ্গরাজ্যের সবচেয়ে বড় শহর পোর্টল্যান্ডে ২০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে তাঁদের দিকে বোতল ছুড়তে শুরু করে এবং আতশবাজি ফোটাতে থাকে। তখন ছত্রভঙ্গ করতে তাদের গ্রেপ্তার করতে শুরু করে পুলিশ। শনিবার সকালের দিকে সেখানে একজন বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হন। তবে তাঁর অবস্থা গুরুতর নয়।
পোর্টল্যান্ডে যে বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তিনি শহরের মরিসন ব্রিজের কাছে মিছিল করছিলেন। সেখানকার পুলিশ বলেছে, গুলি করার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা কোনো অপরাধী চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, গত শনিবার কিছু বিক্ষোভকারী এক চলচ্চিত্র কর্মীর ওপর হামলা চালায়। এ ছাড়া কমপক্ষে দুজনকে লাঞ্ছিত করেছে বিক্ষোভকারীরা।
ট্রাম্পের নিজের শহর নিউইয়র্কে কয়েক হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করেছেন। বিক্ষোভকারীদের মুখে ছিল ট্রাম্প বিরোধী নানা স্লোগান। সেখানে ট্রাম্পের বাড়ি প্রাসাদোপম ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে বিক্ষোভ চলে। মিছিলে অংশ নেওয়া মেরি ফ্লোরিন-ম্যাকব্রাইড নামের এক সাবেক ব্যাংককর্মী বলেন, ‘দেশ একজন চরম অযোগ্য, নারীবিদ্বেষী ও বর্ণবাদী ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছে। এতে আমরা আতঙ্কিত। তাঁকে যে বিশ্বাস থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হয়েছে, তা ছিল ঘৃণায় ভরা।’
শিকাগো ও লস অ্যাঞ্জেলেসেও হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা শহরগুলোর কেন্দ্রস্থলে মিছিল করে এসে সমাবেশ করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা অভিবাসী ইভলিন বেরজোলা প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিলে অংশ নেন। ৪৬ বছরের এই নারী বলেন, ‘একটি পুলিশি রাষ্ট্র কী করতে পারে তা আমি দেখেছি। যুক্তরাষ্ট্র যে আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে তা রক্ষা করতেই প্রতিবাদে নেমেছি আমি।’
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বিক্ষোভের মধ্যে ট্রাম্পের বক্তব্যে কিছুটা পরিবর্তন দেখা গেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্বাস্থ্যনীতির ব্যাপক সমালোচনা করলেও ট্রাম্প এখন তা বাতিল করার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। গত শনিবার এক টুইটার বার্তায় তিনি সব আমেরিকানকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাব খুঁজছেন ট্রাম্প: কয়েক দিন ধরে চলা বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে পরামর্শকদের সঙ্গে আলোচনা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত শনিবার নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের বাড়িতে পরামর্শকদের নিয়ে আলোচনায় বসেন তিনি। কাজ করছেন নতুন প্রশাসন গঠনের ব্যাপারেও।
ট্রাম্পের প্রচারণা বিষয়ক ব্যবস্থাপক কেলিঅ্যান কনওয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ পদে নিয়োগ ‘আসন্ন’। এ পদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান রেইন্স প্রাইবাস রয়েছেন।