গ্রাম বাংলা ডেস্ক: শহীদ মিনার কোন বিশেষ গোষ্ঠীর সম্পদ নয় বলে মন্তব্য করেছে নাগরিক সমাজের বৃহত্তম সংগঠন শত নাগরিক। সংগঠনটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, শহীদ মিনারে অধ্যাপক পিয়াস করিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়ে যারা বিরোধীতা করছেন, তারা সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, অধ্যাপক ড. পিয়াস করিমের মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। তাঁর মৃত্যুতে শিক্ষাঙ্গনে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পূরণ হবার নয়। ড. পিয়াস করিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সমাজ বিজ্ঞানে পিএইচ.ডি করে সে দেশেই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকতা করেছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের এক উজ্জল সন্তান। দেশের টানে বিদেশের আরাম আয়েশের জীবন ত্যাগ করে তিনি ফিরে আসেন এবং অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইকনোমিক্স এন্ড সোস্যাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে অধ্যাপনা করেছিলেন। তিনি তার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় শিক্ষক হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেন।
অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি একজন যথার্থ পাবলিক ইনটেলেকচুয়াল হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি যা বিশ্বাস করতেন তা শাণিত যুক্তি ও প্রজ্ঞার সঙ্গে ব্যক্ত করতেন। অচিরেই তিনি জনমানুষের অত্যন্ত প্রিয় হয়ে উঠেন। তার স্ত্রী অধ্যাপক আমেনা মোহসিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগে একজন কৃতি শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।
ড. পিয়াস করিমের মৃত্যুর পর এ দেশের বোদ্ধা সমাজ শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য তার মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। চিন্তা ও চেতনার জগতে ড. পিয়াস করিম ছিলেন একজন প্রগতিশীল ও খোলা মনের মানুষ। এরকম একজন কৃতি পুরুষ আমাদের সমাজে বিরল। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় একটি মহল শহীদ মিনারে তার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের বিরোধিতা করে মত প্রকাশ করেছে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং সংকীর্ণ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। যারা এই দূর্ভাগ্যজনক মত প্রকাশ করেছেন তারা বুঝতে পারছেন না এর ফলে একটি খারাপ নজির স্থাপিত হচ্ছে। আমরা আশা করব, তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবেন।
দর্শনগত অবস্থানের জন্য কারো সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করা যায়। কিন্তু কোনোক্রমেই তার প্রতি মৃত্যুর পর অশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা যায় না। শহীদ মিনার কোনো গোষ্ঠী বিশেষের সম্পদ নয়। এটি জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। আমরা ড. পিয়াস করিমের বিদেহী আত্মার প্রতি পরম শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
বিবৃতিদাতারা হচ্ছেনÑ প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমদ, প্রফেসর ডা. এম এ মাজেদ, বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ, কবি আল মাহমুদ, ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী, ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী, কবি ফরহাদ মজহার, ড. মাহবুব উল্লাহ, মোহাম্মদ আসাফউদদৌলা, সাদেক খান, ড.এসএমএ ফায়েজ, ড. ইউসুফ হায়দার, ড. সদরুল আমিন, শফিক রেহমান, মাহফুজ উল্লাহ, ড. তুহিন মালিক, ড. তাজমেরী এস ইসলাম, ড. মুশতাহিদুর রহমান, ড. জিন্নাতুননেসা তাহমিদা খাতুন, ড. আখতার হোসেন, ড. আমিনুর রহমান মজুমদার, ড. দিলারা চৌধুরী, ড. মুশতাহিদুর রহমান, ড. সলিমুল্লাহ, ড. আবদুল লতিফ মাসুম, কবি আল মুজাহিদী, কবি আবু সালেহ, কবি কেজি মোস্তফা, কবি এরশাদ মজুমদার, কবি হাসান হাফিজ, কবি আবদুল হাই শিকদার, রুহুল আমিন গাজী, শওকত মাহমুদ, রিয়াজ উদ্দিন আহমদ, আমানুল্লাহ কবির, কামাল উদ্দিন সবুজ, এম এ আজিজ, ডা. এজেডএম জাহিদ, ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, কৃষিবিদ আনোয়ারুন্নবী বাবলা, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, কাদের গণি চৌধুরী, ড. তাহমিনা ইসলাম টফি, ড. দিল রওশন জিনাত আরা নাজনীন, চাষী নজরুল ইসলাম, ড. শাহেদা রফিক, ড, সুকোমল বড়ূয়া, ড. মামুন আহমেদ এলাহী নেওয়াজ খান, খন্দকার মনিরুল ইসলাম, হাসান জাকির তুহিন, ড. হারুনুর রশিদ, ড. আজহার আলী, ড. ইফতেখার মাসুদ, ড. হাসান মোহাম্মদ, ড. সিদ্দিক আহমদ চৌধুরী, ড. মুনীর আহমদ চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার আবু সুফিয়ান, অধ্য সেলিম ভূইয়া ও ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম। বিজ্ঞপ্তি