আগৈলঝাড়ার সংবাদ

Slider বরিশাল

agailjhara-photo-12-11-16
বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শিক্ষা বোর্ড নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের মাধ্যমে চলছে ২০১৭ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণ। অতিরিক্ত ফি’র মাধ্যমে ফরম পুরণের অভিযোগ রয়েছে উপজেলা সদর স্কুল ব্যতীত অধিকাংশ স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনায় কৃষিনির্ভর এলাকার দরিদ্র অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক সমিতির নেতার রয়েছেন নির্বিকার। বরিশাল শিক্ষা বোর্ড নির্দেশিত প্রবেশপত্র, প্রাকটিক্যাল, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, মূল সনদপত্র, স্কাউট, শিক্ষা সপ্তাহ ফি, জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষা ফি’সহ এসএসসি ফরম পূরণের জন্য নিয়মিত বিজ্ঞান বিভাগে ১৭৮৫ টাকা, মানবিক ও বানিজ্য বিভাগে ১৬৯৫ টাকা ধার্য করা হয়েছে। তবে বোর্ডের নির্দেশিত ফি নিয়ে উপজেলা সদরসহ হাতেগোনা কয়েকটি স্কুল ফরম পূরণ করলেও বেশীরভাগ স্কুল বোর্ডের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের মাধ্যমে ফরম পূরণ করছে।
স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগে বলেন, উপজেলার ৩৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের বানিজ্যিক মনোভাবের কারণে ফরম পূরণে বোর্ডের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন। বাড়তি টাকা নেয়া স্কুলগুলো নোটিশবোর্ডে শুধুমাত্র বোর্ড ফি’র কথা উল্লেখ করে নোটিশ টানালেও মৌখিকভাবে অতিরিক্ত টাকার কথা জানিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষকরা। কোন কোন স্কুলগুলোতে কোচিং ফি’সহ ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অনেক স্কুল ১৮শ’ টাকা পর্যন্ত কোচিং ফি আদায় করছে। তারা ‘কোচিং ফি’র পরিবর্তে ‘অতিরিক্ত ক্লাশ’ আখ্যা দিয়ে এই টাকা নিচ্ছে। একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, শুধু বোর্ড ফি নিয়েই ফরম পূরণ করছেন তারা। ফরম পূরণের সময় কোচিং ফি নিলেও অনেক স্কুলেই নিয়মিত কোচিং হয়না। কোচিং ফি নেয়ার পরেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র ফি, কেন্দ্র ফি, প্রাকটিক্যাল, কোচিং ফি’র নামে নেয়া হবে অতিরিক্ত টাকা। এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুনীল কুমার বাড়ৈ বলেন, স্কুলগুলোকে বোর্ড ফি নিয়ে ফরম পূরণ করতে বলা হয়েছে। তারপরও যদি কোন শিক্ষার্থী অতিরিক্ত ক্লাশ করতে চায় তবে এজন্য সহনশীল পর্যায়ে স্কুলগুলো নিজেরা ফি ধার্য করবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য উপজেলায় শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়ে মিটিং করে ফি নির্ধারণ করা হয়। আগৈলঝাড়া উপজেলায় তা করা হয়নি। বোর্ড ফি’র চেয়ে স্কুলগুলো বেশী টাকা নিলেও সরকারী কোন নির্দেশনা না থাকায় তিনি কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
আগৈলঝাড়ায় গণপূর্ত বিভাগের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে
চলছে সরকারী ৩টি দপ্তরের কার্যক্রম

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ৩টি সরকারী অফিসের কাজকর্ম। এ ভবনটি নির্মাণের পর দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় সরকারী ৩টি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারন লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চরম উৎকন্ঠার মধ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৫ সালে উপজেলা আদালত ভবন ও হাজতখানা হিসেবে বরিশাল গণপূর্ত অধিদপ্তর এ ভবনটি নির্মাণ করেন। এরপর উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম স্থগিত হলে ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে পরে। ফলে ভবনের বিভিন্নস্থানে প্লাস্টার খসে বড় বড় ফাঁটল ধরায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ হয়ে পরেছে ভবনটি। উপজেলা সদরে কোন কার্যালয় ও কার্যক্রমের সুবিধা না থাকায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, সেটেলমেন্ট অফিস ও পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনসহ ৩টি অফিসের দাপ্তরিক কার্যক্রম চলছে ভাড়ার বিনিময়ে। গণপূর্ত বিভাগ ভাড়া আদায় করলেও দীর্ঘদিনে তা সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি। সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো বছরের পর বছর আবেদন করলেও গণপূর্ত বিভাগ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
সেটেলমেন্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের ১ জানুয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ৩টি কক্ষ মাসিক ৫০ টাকা ভাড়া হিসেবে বরাদ্দ দেয় গণপূর্ত বিভাগ। ওই সময় থেকে এপর্যন্ত ভাড়া পরিশোধের মাধ্যমে প্রতি মূহুর্তে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও জনগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে। ভবন সংস্কারের জন্য ২০০৮ সালের ৩ মার্চ, ২০০৯ সালের ২০ মে, ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ৩ দফায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে পৃথক পৃথক লিখিতভাবে আবেদন করেন সেটেলমেন্ট অফিস। ওই ভবনটি এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে চারদিকের দরজা-জানালা ভাঙা, ছাদের প্লাস্টার উঠে গিয়ে রড বের হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পরে সেটেলমেন্ট অফিসের রেকর্ডের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমান ভাঙা দরজা-জানালা ও ছাদে কোন রকমে পলিথিন কাগজ দিয়ে অফিসের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব অফিসে কাজের জন্য প্রতিদিন আসা লোকজন চরম আতঙ্ক ও ঝুঁকির মধ্য দিয়ে তারা কাজ করছেন। ভবন নির্মাণের ৩০ বছর পেড়িয়ে গেলেও এর সংস্কার না করায় এটি এখন পরিত্যক্ত ভবন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তারপরেও জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে ওই স্থানে তাদের অফিস করতে হচ্ছে। অফিসে আসা লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা অফিসে ঢুকলেও কাজকর্মের ফাঁকে সব সময় তারা আতঙ্কের মধ্যে থাকেন কখন তাদের গায়ে প্লাস্টার খসে পরে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, গণপূর্ত বিভাগের বরিশাল জেলা অফিসের সাথে আলোচনা করে সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *